দুর্গন্ধ-দুর্ভোগ থেকে মুক্তি চায় গুরুদাসপুর পৌরবাসী

নাটোরের গুরুদাসপুর পৌর শহরের মোড়ে মোড়ে ময়লা-আবর্জনার স্তুপ দুর্গন্ধ ও দুর্ভোগে পৌরবাসী। সেই সাথে রাত হলেই ভূতুরে অন্ধকারে অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে শহর। শহর অন্ধকারে থাকায় চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধ প্রবনতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। পৌরসভার গেট থেকে শুরু করে রাস্তাঘাটসহ যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। দিনের পর দিন বন্ধ থাকায় আস্তে আস্তে ময়লা আবর্জনার স্তুপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই সাথে প্রচন্ড দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। বিশেষ করে টানা দু’দিনের বৃষ্টির কারেন পড়ে থাকা ময়লা-আবর্জনা পচে গন্ধ আরো প্রকট আকার ধারন করেছে। গত ১৩ দিন ধরে গুরুদাসপুর পৌরসভায় এ অবস্থা বিরাজ করছে।
জানা গেছে, গত ১৪ জুলাই থেকে পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরকারী কোষাগার থেকে বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য দাবিতে ঢাকা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। একমাত্র পানি সরবরাহ ছাড়া সকল সেবা বন্ধ। সরকারী কোষাগার থেকে বেতন-ভাতার দাবি আদায়ের কর্মসুচি পালনে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারিরা ঢাকায় অবস্থান করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। পৌর এলাকার পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি মুখ থুবড়ে পড়েছে। শহরের অলি-গলিতে এমনকি মোড়ে মোড়ে ময়লা-আবর্জনার স্তুপ জমায় চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। এমনকি পৌর গেটের সামনেই ময়লার স্তুপ জমে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এতে জনসাধারণের পাশাপাশি স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী ও পথচারীসহ সড়কে চলাচলকারীদেরও চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। দুর্গন্ধে লোকজন নাকে রুমাল দিয়ে রাস্তায় চলাচল করছেন। একই সঙ্গে শহরের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ও দোকান মালিকরাও সারাদিন দুর্গন্ধের মধ্যে থেকে ব্যবসা চালাতে গিয়ে অনেকে অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে। এমনকি শ^াসকষ্টে ভুগছে অনেকে।
পৌরসভার গেট থেকে শুরু করে, নারি বাড়ী মোড়, গুরুদাসপুর বাজার, কেন্দ্রীয় মসজিদ গেট, বাসষ্ট্যান্ড এলাকা, মহিলা কলেজ গেট এলাকা, চাঁচকৈড় বাজার মেইন রোড, গুড় পট্টি, চৈতালী হাট মোড়, পুরাতন গোহাট, নতুন গোহাট, কাপুড়িয়া পট্টি, মাছ বাজার, মাংস বাজার, মুরগী পট্টি, কাঠ পট্টি, কাঁচা বাজার এলাকাসহ বিভিন্ন রাস্তা-মোড় ঘুরে দেখা গেছে, এসব সড়কে ময়লা-আবর্জনার স্তুপ জমেছে। একারনে স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ক্লাশে যেতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
শুক্রবার সকালে পৌর এলাকার গুরুদাসপুর মহল্লার বাসিন্দা ব্যবসায়ী আহসান হাবিব বাবু জানান, শহরে অত্যাধিক ময়লা আবর্জনার তীব্র গন্ধের কারনে তার ৮ বছরের ছেলে সাদমান হাবিব বৃহস্পতিবার স্কুল থেকে বাড়ী ফিরে বেশ কয়েকবার বমি করে। এর পর তার শ^াসকষ্ট শুরু হয়। শ^াসকষ্ট জনিত কারনে শুক্রবার সকাল পৌনে ৭টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি চায় তারা।
গুরুদাসপুর পৌর কর্মকর্তা-কর্মকারি সার্ভিস এ্যাসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক এমদাদুল হক জানান, সরকারী কোষাগার থেকে বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য দাবিতে ঢাকায় লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচি চলছে। অফিসের সবাই সেখানে। তাদের দাবি পুরন না হওয়া পর্যন্ত অফিসে ফিরে আসবে না বলে জানান তিনি।
পৌর মেয়র শাহনেওয়াজ আলী মোল্লা জানান, পৌর কর্মকর্মর্তা-কর্মচারীরা আন্দোলনে থাকায় সকল সেবা বন্ধ আছে। তারা কাজ না করলে ময়লা-আবর্জনা সরানোসহ কোন কাজই করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে দ্রুতই এর একটা সমাধান হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।