গুরুদাসপুরে স্কুল শিক্ষিকা মঞ্জু হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন

নাটোরের গুরুদাসপুরের বৃ-কাশো সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক লতিফা হেলেন মঞ্জুকে (৩২) হত্যার প্রতিবাদে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।


বৃহস্পতিবার দুপুর ২ টার সময় থানা গেট সংলগ্ন শাপলা চত্বরে ৯০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫শতাধিক শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ওই মানববন্ধনে অংশ নেয়। মনিববন্ধনে বৃ-কাশো সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বেলাল হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি সোরওয়ারর্দী হোসেন, সাধারন সম্পাদক এসএম নজরুল ইসলাম, রাশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি আহম্মদ আলী মোল্লা, শিক্ষক নেতা এমদাদুল হক, গোলাম মোস্তফা ভুলু, ওবায়দুল হক, মোস্তাফিজুর রহমান, সাংবাদিক আলী আককাছ প্রমুখ। বক্তারা মঞ্জু হত্যাকারী দুর্বৃত্তদের দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানান। আর যেন কোন শিক্ষক প্রাণ দিতে না হয় এব্যাপারে প্রশাসনকে সতর্ক থাকার আহবান জানান।


উল্লেখ্য, মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের গোপিনাথপুর গ্রামে ওই শিক্ষীকার নিজ বাড়ীতে নিপিরন করে হত্যা করা হয়। নিহতের মা পাশর্^বতী ভাইয়ের বাড়ীতে জমি নিয়ে কথা বলতে যায়। মা যাওয়ার পর হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হয়। ওই সময় প্রায় ঘন্টাব্যাপী প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছিল। বাড়ীতে কেউ না থাকার সুযোগে দুর্বৃত্তরা মঞ্জুকে একা পেয়ে গণধর্ষনের পর হত্যা করে তার লাশ বিবস্ত্র অবস্থায় পাশের এক পুকুরে ফেলে দেয়া হয়। এতে স্থানীয়রা দাবি করেন তাকে ধর্ষনের পর হত্যা করে তার লাশ ওই পুকুরে ফেলে দিয়েছে দৃর্বৃত্তরা। এঘটনায় নিহতের মা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামী দিয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। এঘটানায় পুলিশ নিহতের সাবেক স্বামী মমিনুলকে আটক করেছে।
স্থানীয়রা জানান, ১৮ বছর পুর্বে একই গ্রামের মুনছের আলীর ছেলে মমিনুল হকের সাথে মঞ্জুর বিয়ে হয়। এক সন্তান মিতু জন্মানোর পর ১২ বছর পুর্বে স্বামঅ-স্ত্রীর সমপএর্কও অবনতি হলে তাদের মধ্যে খোলা তালাক হয়ে যায়। সেই থেকে মঞ্জু তার বিধাব মা’র বাড়ীতে থাকে। ২০১০ সালে বৃ-কাশো প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসাবে চাকুরি নেন তিনি। ওই দিকে মমিনুল বিয়ে করে দ্বিতীয়-সন্তান নিয়ে সংসার করছে।
নিহত মঞ্জুর মেয়ে মিতু জানান, তার মা খুব পরিশ্রমি ছিলেন। তাকে নিয়েই তার স্বপ্ন ছিল। কাউরো সাথে কোন ঝামেলা ছিলনা। তবে তার মা স্বামী পরিত্যক্তা বলে প্রতিবেশীরা অনেক সময় কটুক্তি করতেন।


নিহত মঞ্জুর মা মনোয়ারা বেগম জানান, তিনি রাত সাড়ে আটটার দিকে মেয়েকে একা রেখে জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পাশ^বর্তী ভাইয়ের বাড়ীতে কথা বলতে যায়। যাওয়ার সময় তার মামার বাড়ী থেকে রাতের খাবার নিয়ে এসে এক সাথে খাবে। ওই সময় মঞ্জু ঘরের মেঝেতে বসে ভোটার তালিকার কাজ করছিল। ওই সময় বৃষ্টি হয়। বৃষ্টির পর বাড়ী এসে দেখতে পায় তার বাড়ীর গেট খোলা। ঘরের ভিতওে মেয়ে নেই। দরজার পাশে অনেক রক্ত। সেখানে মেয়ের রক্ত মাখা কাপড় পড়ে আছে। রক্ত দেখে তিনি চিৎকার করতে থাকে। তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে মঞ্জুকে খুঁজতে শুরু করে। খোজা-খুঁজির এক পর্যায়ে পাশের পুকুরে বিবস্ত্র লাশ দেখতে পায়।
গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোজাহারুল ইসলাম জানান, আটককৃত মমিনুলের মুখ থেকে এখনও তেমন কোন তথ্য বেড় করা সম্ভব হয়নি। তাকে আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ডের আবেদন করা হবে। লাশটি বিবস্ত্র থাকায় ধারনা করা হচ্ছে তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।