ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধি
পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ডিবি পুলিশ গ্রেফতারের ভয় দেখিয়ে ছয়জন ঘি ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৪ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে পাবনা ডিবি পুলিশের একটি দল উপজেলার চরভাঙ্গুড়া গ্রামের ঘোষ পাড়ায় ৬ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে এ টাকা হাতিয়ে নেয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা মঙ্গলবার বিকেলে ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আশরাফুজ্জামান ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসুদ রানাকে ঘটনা তদন্ত করার নির্দেশে দিয়েছেন।
অভিযোগে জানা যায়, ঘি ব্যবসায়ী পরিতোষ ঘোষ, বলাই ঘোষ, বিপ্লব ঘোষ, সমর ঘোষ, দেবযানী ঘোষ ও জগদিশ ঘোষ আলাদা পরিবার নিয়ে উপজেলার চরভাঙ্গুড়া গ্রামের ঘোষপাড়ায় পাশাপাশি বসবাস করেন। সোমবার দিবাগত রাত দেড়টার সময় দুইটি মাইক্রোবাসযোগে নারীসহ ২০-২৫ জনের একটি দল ওই ঘোষপাড়ায় প্রবেশ করে। এ সময় এই দলের সদস্যরা পাঁচ ছয় ভাগে বিভক্ত হয়ে ওই ঘি ব্যবসায়ীদের বাড়িতে প্রবেশ করে।
বাড়িতে প্রবেশের পরে তারা ঘি কেনার কথা বলে ঘরে ঢুকে প্রত্যেকের হাতে হাতকড়া লাগায় এবং অস্ত্র দেখিয়ে ভয়ভীতি দেখায়। এ সময় তাদেরকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ভয় দেখিয়ে ডিবি পুলিশ প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা করে দাবি করে। এতে বাধ্য হয়ে পরিতোষ ঘোষ ৫০ হাজার, বলাই ঘোষ ৬০ হাজার, বিপ্লব ঘোষ ৯০ হাজার, সমর ঘোষ দুই লাখ ১৫ হাজার, দেবযানী ঘোষ ২০ হাজার, জগদীশ ঘোষ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে মুক্তি পায়। টাকা নিয়ে ডিবি পুলিশ চলে গেলে রাতেই ব্যবসায়ীরা বিষয়টি ভাঙ্গুড়া ইউপি চেয়ারম্যান বেলাল হোসেনকে জানায়।
ভাঙ্গুড়া ইউপি চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে উপযুক্ত বিচার চাইব।
এদিকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে পাবনা ডিবি পুলিশের ওসি দেলোয়ার হোসেন বলেন, অভিযোগকারী প্রত্যেকেই বাটার ওয়েল দিয়ে ঘি তৈরি করে। তাই ডিবি পুলিশের একটি দল ভাঙ্গুড়ায় গিয়ে ঘিয়ের নমুনা সংগ্রহ করেছে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা এই মিথ্যা অভিযোগ করেছে। গভীর রাতে কেন ডিবি পুলিশ নমুনা সংগ্রহ করতে গেলেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, অন্যায় যেকোনো সময় হতে পারে। তাই পুলিশের অভিযানের সময় রাত-দিন বলে কিছু নেই।
ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসুদ রানা বলেন, ইউএনওর নির্দেশে অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুজ্জামান অভিযোগ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে বলেন, অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে থানার ওসিকে বিষয়টি তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শক্রমে এবং তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।