ঈশ্বরদী ॥ পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অপরিপক্ষতার কারণে রাজস্ব আয়ের পর্যাপ্ত সুযোগ থাকার পরও রেল কর্তৃপক্ষকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে। অস্বচ্ছ ভাবে আসন বন্টনের কারণে আজ বুধবার থেকে বেনাপোল-যশোর-ঈশ্বরদী-ঢাকার মধ্যে চালু হওয়া বিরতিহীন বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের প্রথম দিনেই শুধুমাত্র ঈশ্বরদী থেকেই প্রায় ১ লাখ টাকা রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে রেলকর্তৃপক্ষ। একই কারণে রেল কর্তৃপক্ষের আগামি এক মাসে প্রায় ৩০ লাখ টাকা রাজস্ব আয় কম হবে। ঈশ্বরদীতে কমপক্ষে ২’শ৫০ আসনের চাহিদার স্থলে ট্রেনটিতে আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে মাত্র ৩৫ টি। এতে প্রতিদিন রাজস্ব আয়ের টার্গেট ধরা হয়েছে মাত্র ১১ হাজার ৯’শ ৭৫ টাকা মাত্র। রেলওয়ের বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত কয়েকজন স্টাফ এবং ভুক্তভোগী ট্রেন যাত্রীদের দেওয়া অভিযোগ সুত্রে এসব তথ্য জানাগেছে।
সুত্রমতে,ঈশ্বরদীসহ পাবনা জেলাবাসী,লালপুর,বড়াইগ্রাম,আটঘরিয়া,ভেড়ামারা উপজেলাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল ঈশ্বরদী স্টেশন থেকে ঢাকার মধ্যে আন্তঃনগর ট্রেন চালু করবেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সেটি করা হয়নি। রাজশাহী-ঢাকা এবং পঞ্চগড়-ঢাকার মধ্যে বিরতিহীন বনলতা ও পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেন চালু করার পর বিরতিহীন বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন চালু করা হলো। জাতীয় সাংবাদিক সোসাইটি ও ঈশ্বরদী টিভি জার্ণালিস্ট এ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ এবং ঈশ্বরদীবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে ট্রেনটিতে যাত্রী ভ্রমনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ঈশ্বরদী স্টেশন ব্রিটিশ আমল থেকেই গুরুত্বপূর্ণ। তারপর বর্তমান সরকার আমলে রুপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও ইপিজেডকে ঘিরে অসংখ্য বিদেশীদের বসবাস শুরু হয়েছে। এখানে প্রতিদিন বিমানের দু’টি করে ফ্লাইট চালানো হলেও যাত্রী সংকট হবেনা । কিন্তু বিমান বন্ধ থাকায় ট্রেনের ওপর বিদেশী যাত্রীদের চাপ বেশী। তারা প্রয়োজনীয় টিকিট পাননা। এর বাইরেও ঈশ্বরদীর বেশকিছু সরকারী কর্মকর্তা,শিল্পপতিসহ ব্যবসায়ীরাও একই সংকটে ভুগছেন। যে কারণে এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা অর্থনৈতিক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। এ অবস্থায় বেনাপোল-যশোর-ঈশ্বরদী-ঢাকার মধ্যে চালু হওয়া বিরতিহীন বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন চালু করা হল। ঈশ্বরদী স্টেশন থেকে যাত্রীদের ভ্রমনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। অথচ আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫ টি এসি চেয়ার ও ৩০ শোভন চেয়ার। যা চাহিদার তুলনায় সাত ভাগের এক ভাগ এবং ভ্রমন ইচ্ছুক ঈশ্বরদীর যাত্রীদের জন্য খুবই অপ্রতুল।
। এতে এসি চেয়ার ৬২৫ টাকা ও শোভন চেয়ার ২৯৫ টাকা হিসেবে প্রতিদিন রাজস্ব আয় হবে মাত্র ১১ হাজার ৯’শ ৭৫ টাকা। ঈশ্বরদীতে কমপক্ষে চাহিদা রয়েছে এসি বাথ ৮ টি,এসি সিট ১৬ টি,এসি চেয়ার ২৫ টি ও শোভন চেয়ার ২০০ টি। এই চাহিদা মোতাবেক আসন বরাদ্দ দেওয়া হলে প্রতিদিন রাজস্ব আয় হবে ১লাখ ৭ হাজার ৩’শ ৬৮ টাকা। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অপরিপক্ষতা ও দক্ষতার অভাবে এভাবে আসন বন্টন করা হয়েছে। জাতীয় সাংবাদিক সোসাইটি ও ঈশ্বরদী টিভি জার্ণালিস্ট এ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দসহ ঈশ্বরদীর সকল শ্রেণীপেশার মানুষের দাবি, বর্তমান জনমুখী রেলপথ মন্ত্রী ঈশ্বরদীর বাস্তব অবস্থা বিবেচনা করে শীঘ্রই ঈশ্বরদীতে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের আসন বৃদ্ধির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।