বাগমারায় পুকুর লীজকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত ১০

রাজশাহীর বাগমারায় সরকারী পুকুর লীজ নেয়াকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের লোকজন বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। হামলার ঘটনায় নারী ও শিশুসহ ১০ জন আহত হয়েছে। খবর পেয়ে বাগমারা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে ঁেপৗছে পরিস্থিতি শান্ত করেন এবং আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য বাগমারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। আহতদের মধ্যে রিমা খাতুন (২৫) ও ফাইম হোসেনের (৮) অবস্থা আশংকা জনক বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। অন্যান্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। ওই ঘটনায় আহত রিমা খাতুনের স্বামী আফজাল হোসেন বাদী হয়ে গতকাল রোববার সকালে ১৫ জনের নামে বাগমারা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। ঘটনার পর থেকেই এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে।

থানার লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ঝিকরা ইউনিয়নের মধ্যঝিনা গ্রামের ওয়ার্ড আ’লীগের সাধারন সম্পাদক হাবিবুর রহমান ও গুনিয়াডাঙ্গা গ্রামের আফজাল হোসেন যৌথ ভাবে মাছ চাষের জন্য সরকারী নীতিমালানুসারে উপজেলা জলমহল কমিটির কাছ থেকে সরকারী পুকুর টেন্ডারের মাধ্যমে লীজ গ্রহন করে মাছ চাষ করে আসছিলেন। এবারো তারা পুকুরটি লীজ নেয়। মসজিদের নাম ভাঙ্গিয়ে এলাকার কিছু চি‎িহ্নত স্বার্থপর ব্যক্তি পুকুরটি নিজেদের নামে দখলের চেষ্টা করে। বিষয়টি জানার পর সদ্য বদলিতকৃত উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) আবুল হায়াত উভয় পক্ষের শুনানী শেষে মিমাংসা করে দেয়। আবুল হায়াতের বদলীর বিষয়টি জানার পর প্রতিপক্ষের আব্দুল লতিফ, হামিদুল হক, জিয়াউর রহমানসহ তারা মিমাংসায় না এসে পুকুরটি দখলে নেয়ার চেষ্টা করেন। গত শনিবার বিকেল আফজাল হোসেন পুকুরে মাছের খাবার দিতে গেলে জিয়াউর রহমানসহ তাদের লোকজন বাঁধা সৃষ্টি করে আফজাল হোসেনকে মারধর করে। বিষয়টি জানার পর তার পক্ষের লোকজন জিয়া পক্ষের লোকজনকে মারধর করলে গত শনিবার সন্ধ্যায় জিয়াপক্ষের লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে আফজাল হোসেনের বাড়িঘরে হামলায় চালায়। এসময় আফজাল হোসেনের স্ত্রী রিমা কাতুন বাঁধা দেয়ার চেষ্টা করলে হামলাকারীরা তাকে বেদম মারপিট করে আহত করেন। ওই সময় হামলাকারীরা ফাইম নামের এক শিশুকে মারপিট করেন। হামলার খবর পেয়ে বাগমারা থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে যায় এবং পরিস্থিতি শান্ত করে আহতদের চিকিৎসার জন্য বাগমারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন। পুকুরের লীজ গ্রহিতা ওয়ার্ড আ’লীগের সাধারন সম্পাদক হাবিবুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, হামলাকারী জামায়াত, বিএনপি’ ও জেএমবি’র সক্রিয় সদস্য। তাদের বিরুদ্ধে জঙ্গি তৎপরতার একাধিক মামলা রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে লুটপাট ও নারীদের শারীরিক ভাবে নির্যাতন করেছেন।

তিনি ওই সকল নির্যাতনকারীদের বিচার দাবী করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রতিপক্ষের জিয়্উার রহমান জিয়া। তিনি বলেন, মসজিদের উন্নয়নের জন্য এলাকার লোকজন সরকারী পুকুরটি লীজ নিতে চান,এর বেশী তিনি আর কিছু বলতে চাননি। এ ব্যাপারে উপজেলা জলমহল কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকিউল ইসলাম বলেন, সরকারী নীতিমালানুসারে পুকুরটি লীজ দেয়া হয়েছে। পুকুর নিয়ে জারা ঝামেলা সৃষ্টি করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনিগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বাগমারা থানার ওসিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে বাগমারা থানার ওসি আতাউর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এলাকার লোকজন পুকুরটির মিমাংসার জন্য বসার কথা রয়েছে। বসে নিস্পত্তি না হলে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান তিনি ।