খালেদ আহমেদঃ
পাবনা টাউন গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক রবিউল করিম ফিরোজ তার সহকারী প্রধান শিক্ষক আমিন উদ্দিনসহ তার কোচিংয়ে পড়ুয়া কিছু বিতার্কিত শিক্ষার্থীদের দায়ী করে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন গণমাধ্যমে
প্রচার হওয়া সংবাদকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে ফাঁসানোর অভিযোগ তুলেছেন।
গতকাল শনিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে পাবনা প্রেসক্লাবের ভিআইপি অডিটোরিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। এসময় তার স্ত্রী সহকারী শিক্ষক আসমা খাতুন ও ভাই ভাঁড়ারা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মঞ্জুরুল করিমও বক্তব্য দেন। সেখানে তার একমাত্র সন্তান আইইউবি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী রিফা তাসফিয়া উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে রবিউল দাবি করেন, মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে আমি এই বিদ্যালয়ে যোগদান করি। আমার যোগদান কারও দয়ার দান নয়। বিদ্যালয়ের নির্মিত ভাড়া দেওয়া ঘর হতে আদায়কৃত অর্থ পরিচালনা পরিষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক হিসাব বিবরনীতে লিপিবদ্ধ আছে। ২০১৩ইং সালের বিদ্যালয়ে কোন প্রকার মন্ত্রণালয় অডিট হয় নাই। অডিটের নামে আমি ব্যাক্তিগতভাবে কোন দিন কোন শিক্ষক-কর্মচারীর নিকট থেকে কোন প্রকার অর্থ গ্রহণ করি নাই। অগ্রণী ব্যাংকে শিক্ষকদের টিউশন ফি ম্যানেজিং কমিটির রেজুলেশন মোতাবেক খরচ হয়। কোন দিন কোন প্রকার টাকার ভাগ-বাটোয়ারা হয় নাই। আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র মিথ্যা ও অভিযোগ বার বারই মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।
আমার বিরুদ্ধে করা ছাত্রীদের সঙ্গে যৌন হয়রানি ও বিদ্যালয়ের অর্থ লুটপাট, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ যেসব অভিযোগ করা হয়েছে সেগুলো ষড়যন্ত্রমূলক।
তিনি বলেন আমার কক্ষে কোনো আপত্তিকর অপদ্রব্য ছিল না কিন্তু গত ১৬ অক্টোবর বিকাল ৩ টায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এর কার্যালয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এর আলমারীর চাবি (দুই ব্যাংকের চেক বই, রেজুলেশন খাতা ও চেক ইস্যু খাতা) সহঃ প্রধান শিক্ষকের নিকট দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আলমারিতে বিদ্যালয়ের বিগত দিনের সকল প্রকার আদায়কৃত রশিদের মুড়ে বই, দোকান আদায় রশিদ বই, আয়-ব্যায় রেজিস্টার খাতা, ক্যাশ বহি, সকল শিক্ষক কর্মচারীর নিয়োগ ফাইল, এসএসসি ও জেএসসি এর সকল তথ্য ফাইল, বিদ্যুত বিল, টেলিফোন ফাইল, বিদ্যালয়ের জমি সংক্রান্ত সকল ফাইল ম্যানেজিং কমিটির রেজুলেশন খাতা, নোটিশ খাতা, এসএসসি ও জেএসসি এর মার্কশিট, সার্টিফিকেট ফাইল, দোকান হস্তান্তর ফাইল, বিদ্যালয়ে ঘটিত সকল প্রকার ফাইল, এমনকি প্রধান শিক্ষকের গ্রামের বাড়ির সকল জমিজমার ফাইল ও প্রধান শিক্ষকের ২০০০ সালে শহরে জমি রাখার দলিল ফাইল, প্রধান শিক্ষকের ব্যাক্তিগত সোনালী ব্যাংক বানিজ্য কেন্দ্র শাখার বেতন উত্তোলন চেক বই ও ব্যাক্তিগত গুরুত্বপূর্ণ ফাইল আলমারীতে সংরক্ষিত আছে।
সহকারী প্রধান শিক্ষকের কাছে রুমের চাবি দেওয়ার পর তিনি বিভিন্ন প্রকার আপত্তিকর অপদ্রব্য আমার কক্ষে রেখে আমার নামে বিভিন্ন স্থানে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। আমি মাদক সেবী নই। যদি কোনো ছাত্রী প্রমাণ করতে পারে আমি তাদের শরীরে হাত দিয়েছি তাহলে আমি নিজেই ফাঁসির দড়িতে ঝুলবো।
তিনি আরো জানান তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চলাকালে তিনি কি করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না। তাছাড়া তিনি অসুস্থও হয়ে যান। তারপর তিনি সুস্থ হয়ে পরিবারের সবার সাথে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করায় সংবাদ সম্মেলন এবং বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রতিবাদ করতে একটু বিলম্ব হয়ে গেছে।
আপনি কোন রাজনৈতিক দলের সাথে জরিত কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন আমি কোনো রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নই। সহকারী প্রধান শিক্ষক আমিন স্কুলের প্রধান শিক্ষক হওয়ার জন্য আমার নামে এ অপপ্রচার চালাচ্ছেন। আমিন তার কোচিংয়ের ছাত্রীদের দিয়ে মিথ্যা যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলছেন। এবিষয়ে আমি ন্যায় বিচার চাই।
তিনি আমিনের কোচিংয়ে পড়ে এমন বেশ কিছু ছাত্রীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক আছে দাবি করে প্রমাণ স্বরূপ একটি ফেসবুক পোস্ট এর কমেন্টের স্ক্রিনশট দেয়া একটি কাগজ তুলে ধরেন যেখানে আমিন সম্পর্কে বিভিন্ন ছাত্রীদের কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য লক্ষ করা যায়।
তার ভাই মঞ্জুরুল বলেন আমার ভাই কখনই কোনো অপকর্মের সাথে জরিত নয়।
স্বামীর চরিত্রের বৈশিষ্ট্য দিতে গিয়ে রবিউলের স্ত্রী আসমা বলেন, তিনি সবসময় সবার সাথে হাসিমুখে কথা বলেন। তিনি খারাপ হলে আমি এখানে আসা তো দূরের কথা তার সাথে সংসারই করতামনা। তিনি কখনোই মাদক সেবন করেন নাই। তবে তিনি পান খান।