// নাটোর প্রতিনিধি
আদালতের মাধ্যমে বদলির স্থগিতাদেশ পেয়েও দীর্ঘ দেড় বছর ধরে গাড়ির দায়িত্ব পাচ্ছেন না নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স চালক মাসুদুল হক। সরকারিভাবে নিয়োগ পাওয়া ওই চালকের স্থলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আদেশকে উপেক্ষা করে আউটসোসিং পদ্ধতিতে নিয়োগ পাওয়া অন্য চালক দিয়ে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালানোর অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও তেলের বকেয়ার চার লক্ষ টাকাও না পাওয়ার অভিযোগ ভুক্তভোগী চালকের। জানা গেছে, ২০২১ সালের মার্চ মাসে বাগাতিপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স চালক হিসেবে যোগদান করেন মাসুদুল হক। ২০২২ সালের আগস্ট মাসে মাদকাসক্তের অভিযোগে তাকে অন্যত্র বদলি করা হয়। পরে সেই বদলি আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিটপিটিশন দায়ের করলে আদালত তার বদলি আদেশ স্থগিত করে। ফলে তিনি বাগাতিপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই কর্মরত থেকে যান। কিন্তু দীর্ঘ দেড় বছর পার হলেও তাকে তার গাড়ি চালানোর দায়িত্ব হস্তান্তর করেননি সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এদিকে গত বছরের ৩১ অক্টোবর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক চিঠিতে বলা হয়, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাদের বরাদ্দকৃত জীপ গাড়ির জন্য আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে নিয়োগকৃত গাড়ি চালকদের দিয়ে অন্য গাড়ি চালানো সম্পূর্ণ বে-আইনি। এমন আইন বহির্ভূত কার্যকলাপ প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। অধিদপ্তরের সে আদেশ না মেনে আউটসোর্সিংয়ের চালক দিয়েই বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চালানো হচ্ছে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী অ্যাম্বুলেন্স চালক মাসুদুল হক বলেন, আমি এই হাসপাতালে যোগদানের পর থেকে সঠিকভাবেই দায়িত্ব পালন করছিলাম। তবে হঠাৎ আমাকে মাদকাসক্ত সাজানো হয়। পরে অফিসের নির্দেশে ডোপ টেস্ট করা হলে টেস্টের রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। তার কিছুদিন পর অহেতুক ও হয়রানিমূলক আমাকে বদলি করানো হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের মাধ্যমে আমার বদলি আদেশ স্থগিত হয়। পরে আমি এখানেই কর্মরত থাকলেও আমাকে আমার গাড়ি চালানোর দায়িত্ব দেয়া হচ্ছেনা। এমনকি আমার পূর্বের পাওনা তেলের চার লক্ষ টাকাও দেয়া হচ্ছেনা। নিয়মবহিঃর্ভুত ভাবে আউটসোর্সিংয়ের ড্রাইভার দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স চালানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে ওই ড্রাইভার একাধিকবার দূর্ঘটনাও ঘটিয়েছেন যাতে গাড়ির ক্ষতিও হয়েছে। আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে নিয়োগকৃত চালক রাকিবুল ইসলাম বলেন, আমাকে স্যার অ্যাম্বুলেন্স চালাতে বলেছেন, তাই চালাচ্ছি। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আঃ রাজ্জাক বলেন, ওই ড্রাইভার মাদকাসক্ত হওয়ায় তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়নি। আর লোক না থাকায় আউটসোর্সিংয়ের চালক দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স চালানো হচ্ছে। এ বিষয়ে নাটোরের সিভিল সার্জন ডা: মুহাম্মদ মশিউর রহমানের মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।