// সঞ্জু রায়, বগুড়া: বগুড়া নারুলীতে বসতবাড়িতে লাগা অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্থ দুই পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে জেলা প্রশাসন। রবিবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রাথমিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের মাঝে ৬ বান্ডিল ঢেউটিন, শুকনো খাবার, কম্বল ও নগদ ১৮ হাজার টাকা বিতরণ করেন বগুড়া জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম।
এসময় তিনি ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সদস্যদের শান্তনা দেওয়ার পাশাপাশি ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় আবারও ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। জেলা প্রশাসক বলেন, শনিবার দেশ টেলিভিশনে প্রচারিত সংবাদে নারুলী এলাকায় এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি তার দৃষ্টিগোচর হওয়ার সাথে সাথেই তিনি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্ষতির পরিমাণ যাচাইয়ের নির্দেশ দেন। তারই ধারাবাহিকতায় রবিবার সকালেই সদর ইউএনও ফিরোজা পারভীন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং দ্রুততম সময়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষে এই পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে তারা চেষ্টা করেছেন। প্রাথমিকভাবে দুটি পরিবারকে তারা ৩ বান্ডিল করে মোট ৬ বান্ডিল ঢেউটিন, শুকনো খাবার, কম্বল এবং ৯ হাজার টাকা করে মোট ১৮ হাজার টাকা প্রদান করলেন। এ সময় জেলা প্রশাসক সাইফুল আরো বলেন, সাধারণ মানুষের এমন বিপদে সরকার অবশ্যই পাশে থাকবে তবে ক্ষতিগ্রস্থ এই পরিবারটির পাশে সমাজের সামর্থ্যবান মানুষদের দাঁড়ানোর লক্ষ্যেও তিনি আহ্বান জানান।
এ সময় অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্থ দিনমজুর আমজাদ হোসেনের দুই ছেলে নুরুল হক ও নয়ন হোসেন জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা প্রশাসনের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তারা বলেন, পরনের কাপড়টি ছাড়া তারা কিছুই নিতে পারেনি। নিজেদের অর্জিত সকল সঞ্চয়, শিক্ষাগত সনদপত্র, তিল তিল করে গড়ে তোলা একটি সংসারের সকল জিনিসপত্র চোখের সামনে পুড়ে যেতে দেখেছে তারা, করার কিছুই ছিল না। তবে তাদের এমন দুর্দিনে বগুড়া জেলা প্রশাসন যেভাবে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং ভবিষ্যতেও সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে এতে তারা আবারও নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে অনুপ্রেরণা পাচ্ছেন। ক্ষতিগ্রস্ত এই পরিবারটি কৃতজ্ঞতা জানান দেশ টিভির প্রতিবেদককেও।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফিরোজা পারভীনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারদের মাঝে এই সহায়তা প্রদানকালে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নিলুফা ইয়াসমিন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আফসানা ইয়াসমিনসহ জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, শনিবার সকালে কোন এক সময় বৈদ্যুতিক শট সার্কিট থেকে থেকে নারুলী এলাকার দিনমজুর আমজাদ হোসেনের বসতবাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। মসজিদের মাইকে ঘোষনা দিয়ে এলাকাবাসী ও পরে ফায়ার সার্ভিস আগুণ নিয়ন্ত্রণে আনলেও আগুনের লেলিহান শিখায় পুড়ে যায় আমজাদের দুই ছেলে নুরুল ও নয়নের সংসারের সবকিছু। পরনের কাপড় ছাড়া কিছুই নিতে পারেনি তারা। এ নিয়ে শনিবারে দেশ টেলিভিশনে প্রতিবেদন প্রচার করা হলে তা দ্রুত নজরে আসে বগুড়া জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের।
তবে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে না আসা পর্যন্ত জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলামের নির্দেশনায় ক্ষতিগ্রস্থ এই পরিবার দুটির পাশে প্রশাসন ভবিষ্যতেও থাকবে বলে জানান সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফিরোজা পারভীন।