// চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি
একটানা মাস্ক পরে চার বছর কাটিয়ে দিয়েছেন রুমন (১৭) নামক ব্যতিক্রমি এক তরুণ। আজীবন মাস্ক পরতে চান তিনি। পাবনা সদরের গোবিন্দা মহল্লার হযরত আলীর ছেলে রুমন দীর্ঘদিন যাবৎ পাবনা পল্লীবিদ্যুত সমিতি-১ এর এজিএম সুফিয়া আমীর এর পরিবারের সাথে পবিস-১ এর কোয়ার্টারে বসবাস করছেন। রান্নাসহ এ পরিবারের বিভিন্ন ধরণের কাজে সহায়তা করেন তিনি।
রবিবার (৪ ফেব্রæয়ারী) রুমন জানান, “করোনা শুরু হওয়ার পর মাস্ক পরতে আমার ভাল লাগত না। কিন্তু আমার খালামনি (এজিএম সুফিয়া আমির) আমাকে অবশ্যই মাস্ক পরতে বলেন। সেই থেকে অদ্যাবধি মাস্ক পরে আসছি। এটি এখন আমার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এখন মাস্ক খুললে আমার ভাল লাগেনা। গোসলের সময় ব্যতীত সারাক্ষণ মাস্ক পরে থাকি এবং সকল কাজ কর্ম করি। মাস্ক পরেই ঘুমাই। রুমে একা খাই। খাওয়ার সময় প্রত্যেকবার মাস্ক উঁচু করে খাবার মুখে দিয়ে আবার মুখ ঢেকে ফেলি। গত চার বছরে মাস্ক ব্যতিত কোথাও যাইনি। পরিবারের সদস্যরা, বন্ধু বান্ধব আমাকে মাস্ক খুলতে বললেও আমি তা করিনি। গত চার বছরে কেউই আমার খোলা মুখাবয়ব দেখেনি। ঘুমন্ত অবস্থায় একদিন আমার ভাই ইমন মাস্ক খুলে দিয়েছিল। আমি এতে খুব রাগান্বিত হই। তার পর আর কেউ জোড় করেনি।”রুমন আরো জানান, মাস্ক পরার পূর্বে তার জ্বর, শর্দি, কাশি হতো। কিন্তু মাস্ক পরার পর থেকে তার আর জ্বর, শর্দি, কাশি হয়নি। এটিকে তিনি মাস্ক পরার সুফল বলে মনে করেন। অন্যদেরকেও মাস্ক পরতে উৎসাহি করেছেন তিনি।
সুফিয়া আমিরের স্বামী শিপন জানান, রুমন দীর্ঘদিন আমাদের সাথে আছে। চায়না, থাই, আরবীয়সহ বিভিন্ন দেশের সুস্বাদু খাবার রান্না করে। অনেকেই বাড়িতে বিশেষ খাবার তৈরী করতে রুমনকে ডাকেন। গত প্রায় চার বছর যাবত একটানা মাস্ক পরে আছে সে।
সুফিয়া আমীর জানান, করোনা শুরু হওয়ার পরেও ও মাস্ক পরতে চাইতো না। সে সময় পরিবারের নিরাপত্তার কথা ভেবে আমি ওকে মাস্ক পরতে বলি। সেই থেকে ও মাস্ক পরে আছে। আর নাকি মাস্ক খূলবে না।
চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, ডাঃ ওমর ফারুক বুলবুল জানান, এটি অবশ্যই ভাল। শুধু করোনা ভাইরাসই নয় মাস্ক পরলে আরো অনেক রোগ ব্যাধী থেকে মুক্ত থাকা যায়। বাইরে বের হবার সময় প্রত্যেকের মাস্ক পরা উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।