// জসীমউদ্দীন ইতি ঠাকুরগাঁও:
কর্মস্থল বাদ দিয়ে অন্যস্থানে অবস্থান করায় ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ মাজহারুল ইসলাম সুজন।
হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় তিনি এ নির্দেশ দেন।
এ সময় তিনি বলেন, সীমান্তের অবহেলিত মানুষের চিকিৎসা সুনিশ্চিত করতে সরকার চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীদের হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পদায়ন করেছে। এখান থেকে নিয়মিত বেতন-ভাতাদি উত্তোলন করছেন তারা। অথচ ডেপুটেশন নিয়ে অবস্থান করছেন অন্যস্থানে। এতে, আমার এলাকার ভোটারদের প্রতি অন্যায় করা হয়েছে। আমি চাই, স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে। এই এলাকার মানুষ সেই দায়িত্ব আমার কাঁধে দিয়েছে। এজন্য ডেপুটেশনে থাকা সকলের বেতন বন্ধ রাখা হয়েছে।
হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৩ চিকিৎসক, ১১ নার্স, ২ মিডওয়াইফ ও ৭ জন কর্মচারী ডেপুটেশন নিয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা শহরের হাসপাতালে কর্মরত রয়েছেন। এসব কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দেওয়া হয় হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে।
হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৯ জন চিকিৎসকের বিপরীতে কর্মরত রয়েছেন ৮ জন। এর মধ্যে ডেপুটেশনে আছেন ৩ জন। সিনিয়র স্টাফ নার্স পদটিতে ৩০ জনের মধ্যে সবাইকে পদায়ন করা হলেও ১১ জন ডেপুটেশন নিয়েছেন। এ ছাড়াও মিডওয়াইফ পদে ৫ জনের বিপরীতে ৩ জন কর্মরত। এর মধ্যে দুজন ডেপুটেশনে আছেন। সিকিউরিটি গার্ড, ওয়ার্ড বয়, কম্পিউটার অপারেটর, পরিসংখ্যানবিদ, জুনিয়র মেকানিকসহ আরও ৭ কর্মচারী ডেপুটেশন নিয়েছেন।
ডেপুটেশন নেওয়ার কারণে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ায় বিঘ্ন তৈরি হয়েছে। রোগীরা সেবা নিতে এসে ফিরে যাচ্ছেন। এর ফলে প্রায় ৬০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে যেতে হচ্ছে ঠাকুরগাঁও জেলা শহরে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শামীমুজ্জামান বলেন, ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় এমপি স্যার বেতন-ভাতা বন্ধ রাখতে বলেছেন। আমরা বেতন-ভাতা বন্ধ রাখবো। পাশাপাশি আমাদের এখানে সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য সার্জারি, গাইনি ও অ্যানেসথেসিয়া কনসালটেন্ট নেই। আলট্রাসনোগ্রামসহ কয়েকটি মেশিন প্রয়োজন। সেগুলো ব্যবস্থা করে দেওয়ার দাবি তুললে তিনি দ্রুত ব্যবস্থা করে দেবেন বলেও আশ্বাস দিয়েছেন।
ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডা. নুর নেওয়াজ আহমেদ বলেন, বেতন বন্ধের বিষয়ে আমাকে কিছু বলেননি এমপি স্যার। তবে চিকিৎসক-নার্সেরা ডেপুটেশনে থাকলেও তারা কিন্তু দায়িত্ব পালন করছেন। এমপি স্যার চাইলে তাদের ডেপুটেশন বাতিল করা হবে।