শ্যালো ও বৈদ্যুতিক সেচ মেশিন জব্দ, ৫০ কিলোমিটার খাল দখলমুক্ত

// নাটোর প্রতিনিধি.
মৎস্য ভান্ডার খ্যাত চলনবিলে খাল-বিল দখলমুক্ত করতে অভিযান শুরু করেছে উপজেলা প্রশাসন। গত তিন অর্থ বছরে ১৭ কোটি টাকা ব্যায়ে পুনঃখননকৃত সিংড়ার চলনবিলের ১৫৪ কিলোমিটার খালের অধিকাংশ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আ’লীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে খাল কেনা বেঁচার অভিযোগ উঠে। কৃষকের সেচ সুবিধা বাঁধাগ্রস্থ ও জলজ জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে এবং দেশীয় প্রজাতির মাছের বিলুপ্তি ঘটছে।
মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বুধবার দিনব্যাপি সিংড়ার আত্রাই মরা নদী ও ত্রিমোহনী এলাকার খাল-বিল দখলমুক্ত করতে অভিযান চালান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা খাতুন। অভিযানে এই এলাকা থেকে বড় বারইহাটি মাদ্রাসার সুপার নজরুল ইসলামের পাঁচ হাজার টাকা অর্থদন্ড এবং তিনটি সেচ মোটর জব্দ করা হয়। নদীকে দখলমুক্ত রাখতে এলাকাবাসীর মাঝে জনসচেতনামূলক প্রচারণা চালান ইউএনও মাহমুদা খাতুন।
এর আগে মঙ্গলবার দিনব্যাপি চলনবিলের ঐতিহ্যবাহী তিশিখালী ও হুলহুলিয়া-সারদানগর খালে অভিযান চালিয়ে ৩০ কিলোমিটার খাল দখলমুক্ত ও খাল শুকিয়ে মাছ শিকারের অপরাধে ভুলু সরদার নামের একজনকে পাঁচ হাজার টাকা অর্থদন্ড ও চারটি সেচ মেশিন জব্দ করেন সিংড়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আল ইমরান। আর উপজেলা প্রশাসনের পর পর দু’দিনের এই অভিযানে ৫০ কিলোমিটার খাল দখলমুক্ত এবং প্রায় লক্ষাধিক টাকার দেশীয় প্রজাতির মাছ উন্মুক্ত জলাশয়ে মুক্ত করা হয়।
অভিযানে আরো উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহাদত হোসেন, চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম প্রমূখ।
চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম প্রশাসনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, উন্মুক্ত জলাশয়গুলো শুকিয়ে মাছ শিকারের ফলে চলনবিলের দেশীয় প্রজাতির মাছের বিলুপ্তির পাশাপাশি জলজ জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে। তারা ২০১২ সাল থেকে চলনবিলে জীববৈচিত্র্য রক্ষাসহ সরকারি জলাভূমি দখলমুক্ত রাখতে সচেতনতা বৃদ্ধি ও জোর দাবি জানিয়ে আসছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা খাতুন বলেন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নামে সরকারি খাল-বিল দখল করে শুকিয়ে মাছ ধরা হচ্ছে। জনস্বার্থে সরকারি খালগুলো দখলমুক্ত করতে উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য অধিদপ্তর বদ্ধ পরিকর। আর প্রশাসনের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।