// নাটোর প্রতিনিধি
নাটোরের লালপুরে বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুল ও সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র উদ্বোধন করা হয়েছে।মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর ২০২৩) উপজেলার লালপুর ইউনিয়নের ডেবরপাড়া গ্রামে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আলেয়া ফেরদৌসী।
সাবেক প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম মুকুলের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শাহিনা সুলতানা, লালপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক পলাশ, স্থানীয় ইউপি সদস্য এমদাদুল হক, সাবেক ইউপি সদস্য মো. আমজাদ হোসেন, বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা মো. খলিলুর রহমান প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন মাজার শরীফ টিবিএম কলেজের অধ্যক্ষ ইমাম হাসান মুক্তি, ছায়া প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিমানুর রহমান, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার শাহজাহান আলী সুজন, নাটোর বসুন্ধরা শুভসংঘের সভাপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান শৈকত, সাধারণ সম্পাদক সুষ্ময় দাস, লালপুর বসুন্ধরা শুভসংঘের সভাপতি জালাল উদ্দীন বাবু, সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলামসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক, স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আলেয়া ফেরদৌসী বলেন, এই এলাকায় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা জরুরি ছিল। সে চেষ্টা এলাকার মানুষ করেই চলেছে। সেই প্রয়োজনীয়তাকে উপলব্ধি করে বসুন্ধরা গ্রুপ এগিয়ে এসেছে। আর বসুন্ধরা শুভসংঘের সাথে সম্পৃক্ত ‘মানবতার ফেরিওয়ালা’ কিছু মানুষের প্রচেষ্টায় তা বাস্তবায়িত হচ্ছে। এখন শিক্ষার পরিবেশ, শিক্ষাবন্ধব মানসিকতা, যাতায়াত ব্যবস্থায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আবশ্যক। সেই সাথে সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নারীদের প্রশিক্ষিত করে স্বাবলম্বী করার যে প্রয়াস গ্রহণ করেছে তা প্রশংসার দাবিদার। বসুন্ধরা গ্রুপের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে প্রতিষ্ঠানটির সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করেন তিনি।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শাহিনা সুলতানা বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপ সবসময়ই দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করে। অসহায় দরিদ্রদের সেলাই প্রশিক্ষণ শেষে তাদের মাঝে সেলাই মেশিন বিতরণের মাধ্যমে অসহায় মানুষগুলো সাবলম্বী হবে বলে আমার বিশ্বাস। বসুন্ধরার এই উদ্যোগ উপজেলার অনেক মানুষ উপকৃত হবে।সেই সাথে স্কুলে শিশু শিক্ষার্থীরা পড়াশুনার সুযোগ পাবে। এই প্রশংসনীয় উদ্যোগকে কাজে লাগাতে হবে। অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি বলেন, তাঁর দপ্তর থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে নারীরা কাজে লাগাতে পারেন না। অস্বচ্ছল নারীদের পরিশ্রমী হয়ে এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে জীবনমানের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে হবে।
লালপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক পলাশ বলেন, এই এলাকার ৫ কিলোমিটারের মধ্যে কোন প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। বসুন্ধরা গ্রুপের এই মহতী উদ্যোগ আনন্দিত করেছে। এলাকার মানুষের চাহিদা বুঝে মনের খোরাক যোগাতে এ সিদ্ধান্ত জনকল্যাণে লাগবে। এই প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।
নাটোর বসুন্ধরা শুভসংঘের সভাপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান শৈকত স্বাগত বক্তব্যে বলেন, বসুন্ধরা শুভসংঘের পৃষ্ঠপোষক বসুন্ধরা গ্রুুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। তাঁর পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে একটি করে স্কুল করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিটি জেলায় একটি করে পাঠাগার করা হবে। শিশুদের হাতে বই তুলে দিতে ও শিক্ষিত জাতি গড়ে তুলতে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত, যারা স্কুলে যেতে পারছে না, সে রকম জায়গায় স্কুল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় এ স্কুলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হলো।
একই সাথে বসুন্ধরা শুভসংঘ সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে উপজেলার বিভিন্ন বয়সী সহায় সম্বলহীন অসহায় ৩০ জন দরিদ্র নারী প্রশিক্ষণ গ্রহণ করবেন। তাদের নিজেদেরকে স্বাবলম্বী করতে প্রশিক্ষণ শেষে সেলাই মেশিন প্রদান করা হবে। বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের আর্থিক সহায়তায় নারীদের হাতে সেলাই মেশিন তুলে দিবেন বসুন্ধরা মিডিয়া গ্রুপের পরিচালক ও কালের কণ্ঠ পত্রিকার প্রধান সম্পাদক লেখক ইমদাদুল হক মিলন।
লালপুর বসুন্ধরা শুভসংঘের সভাপতি জালাল উদ্দীন বাবু বলেন, স্কুলে প্রাক-প্রাথমিকে ৫০ জন শিশুকে ভর্তি করা হয়েছে। এই শিশুদের স্কুল ড্রেস, ব্যাগ, বই সবকিছু দেওয়া হবে। শিক্ষকের বেতনসহ স্কুলের সব খরচ সবই বহন করা হবে। এখানেই শুধু তাদের পড়ানো নয়, বরং তাদের উচ্চ শিক্ষা নিশ্চিত করতে মাসিক বৃত্তি সহায়তা দেওয়া হবে। অভাবে কোনো শিশু শিক্ষা থেকে বঞ্চিত না হয়, তাই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে সাবেক প্রধান শিক্ষক ও শুভসংঘের উপদেষ্টা মো. রফিকুল ইসলাম মুকুল কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, বসুন্ধরা শুভসংঘের সকল ভাল কাজের সাথে থাকবেন। সেই সাথে প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গসহ স্থানীয় সকলকে সহযোগিতার আহবান জানান তিনি।