// মুহাম্মদ আবু হেলাল, শেরপুর প্রতিনিধি : শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সন্ত্রাসী কায়দায় মারপিট, মোরগীর খামারে অগ্নিসংযোগ, তর্কিত জমিতে রোপনকৃত ৪৫০টি সুপারিগাছ কর্তন ও উপড়ে ফেলা সহ বাড়ীতে হামলা চালিয়ে নগদ ৪৫ হাজার টাকা লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। গত১৯নভেম্বর রবিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ১০জনকে বিবাদী করে মামলা দায়ের করলেও ৮আসামী আদালত থেকে জামিনে এসে বাদীকে মামলা তুলে নিতে প্রাণ নাশের হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ বাদীর পরিবারের। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইগাতী উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের পশ্চিম বাকাকুড়া (মুক্তি বাজার) নামক গ্রামের আব্দুর রশিদ ও শহিদুল গংদের।
থানায় দায়ের করা মামলার এজাহার ও এলাবাসীদের সুত্রে জানা গেছে, বাদী ও বিবাদীরা পরস্পর আত্মীয় হলেও দীর্ঘদিন থেকে আব্দুর রশিদ ও শহিদুল গংরাদের সাথে তর্কিত জমি নিয়ে বিরোধে চলে আসছে। এদিক তর্কিত ওই জমিতে নিজেদের মালিকানা সত্ব বিদ্যমান থাকায় আব্দুর রশিদ উক্ত জমিতে ৪৫০টি সুপারিগাছ রোপন করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে শহিদুল গংরা। পরে শহিদুল গংরা সঙ্গবদ্ধ হয়ে পরিকল্পিত ভাবে উক্ত জমিতে রোপনকৃত সবগুলো সুপারিগাছ কেটে উপড়ে ফেলে। শহিদুল গংদের এমন অনৈতিক কাজের বাঁধা দিতে গেলে তাদের হাতে থাকা রামদা, লোহাড় রড সহ লাঠি সোটা নিয়ে রশিদের পরিবারের উপর অর্তকিত আক্রমন চালায়। তাদের আক্রমণ প্রতিহত করতে না পারায় রশিদ ও তার পরিবারের লোকজন দৌড়ে তাদের নিজ বাড়ীতে আশ্রয় নিয়েও রক্ষা পাইনি রশিদের পরিবার। শহিদুল গংরা রশিদের বাড়ীতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে রশিদের ছেলে মারুফ হাসান, আব্দুল হালিম এবং তার স্ত্রী হামেদা বেগমকে পিটিয়ে মারাক্তক ভাবে আহত করা সহ ঘরে ডুকে ভাংচোর করে ঘরে রক্ষিত ৪৫হাজার লুট করে নিয়ে যায়। পরে প্রতিবেশীদের সহযোগীতায় আহতরা ঝিনাইগাতী হাসপাতালে ভর্তি হওয়া সহ একই দিন আব্দুর রশিদ বাদী হয়ে শহিদুল ইসলামকে প্রধান আসামী করে ১০নারি পুরুষের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করে। এ অভিযোগ দায়ের করাকে কেন্দ্র করে আসামীরা ক্ষিপ্ত হয়ে পরবর্তীতে রশিদের মোরগী খামারে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ বিষয়ে থানায় আরো একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। আগের মামলার ৮নারি পুরুষ আদালত থেকে জামিনে এসে বাদীকে মামলা তুলে নিতে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে আসছে।
এ ব্যাপারে উক্ত মামলার বাদী মো. আব্দুর রশিদ এ প্রতিনিধিকে জানান, আমার জমিতে রোপনকৃত ৪৫০টি সুপারিগাছ কর্তন সহ উপড়ে ফেলে দিয়ে আমার স্ত্রী ও দুই ছেলে আহত করে ঘরে থাকা ৪৫হাজার টাকা লুট করে নিয়ে গেছে। এখন বিবাদীরা আদালত থেকে জামিনে এসে উল্টো আমাকে মামলা তুলে নিতে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে আসছে। এমতাবস্থায় আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিয়ে জীবন যাপন করছি। আমি আইন শৃংখলা বাহিনীর কাছে ন্যায় বিচারের দাবী জানাচ্ছি।
অত্র মামলার প্রধান আসামী শহিদুল ইসলাম জানান, জমি নিয়ে সামান্য গণ্ডগোল হয়েছে। তবে টাকা চুরি ও মোরগীর ঘরে আগুন লাগানোর বিষয়টি সঠিক নয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রফিকুল ইসলাম জানান, ১০আসামীর মধ্যে ৮জন আদালত থেকে জামিনে আছে। বাকি দু’আসামী পলাতক থাকায় ওই দুই আসামীকে গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত আছে।
ঝিনাইগাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মনিরুল আলম ভুইয়া জানান, পলাতক ওই দুই আসামী গ্রেপ্তার সহ সুষ্ট তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।