// মুহাম্মদ আতিকুর রহমান, গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি : আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাজীপুর-১ (কালিয়াকৈর) আসনে তৃণমূল বিএনপির মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন বাংলাদেশের প্রাচীনতম ও ঐতিহ্যবাহী বলিয়াদীর জমিদার পরিবারের কর্ণধার চৌধুরী ইরাদ আহমদ সিদ্দিকী।
বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) বেলা ৪টার দিকে গাজীপুর জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে ২০ হাজার টাকা জমা দিয়ে তিনি মনোনয়নপত্র কিনেছেন।
গাজীপুর-১ (কালিয়াকৈর) আসন থেকে চৌধুরী ইরাদ আহমদ সিদ্দিকী তৃণমূল বিএনপির প্রথম মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন বলে জানিয়েছেন গাজীপুর জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ আলতাফ হোসেন মোল্লা।
চৌধুরী ইরাদ আহমদ সিদ্দিকী গাজীপুর-১ ও ৩ ( সংযুক্ত কালিয়াকৈর-শ্রীপুর) আসন থেকে থেকে ২ বার নির্বাচিত বিএনপির সাবেক এমপি চৌধুরী তানভীর আহমেদ সিদ্দিকীর বড় ছেলে ও বিএনপি গাজীপুর জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিষ্টার চৌধুরী ইশরাক আহমদ সিদ্দিকীর বড় ভাই। তিনি ২০১৫ সালে লাউ প্রতীকে মেয়র পদে ঢাকা (উত্তর) সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেন এবং তৎকালীন মেয়র আনিসুল হক ও বিএনপি প্রার্থী তাবিথ আউয়ালকে ঢাকার মিরপুরের পাইকপাড়ার দুইটি কেন্দ্রে পরাজিত করেন।
তৃণমূল বিএনপির থেকে নির্বাচন করার বিষয়ে চৌধুরী ইরাদ আহমদ সিদ্দিকী বলেন, “গত ৩০ বছর কোনো কালিয়াকৈরের সন্তানকে জাতীয় সংসদে নির্বাচিত হইতে দেয়া হয় নাই। ১৯৯০ এর দশক থেকে ছয় মেয়াদে শ্রীপুরের সন্তান মরহুম এডভোকেট রহমত আলী ও গাজীপুর সদরের সন্তান ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হককে আওয়ামীলীগ নমিনেশন দিয়ে এমপি ও মন্ত্রী বানিয়েছে।
তাই চৌধুরী ইরাদ আহমেদ সিদ্দিকী মনে করেন দেরীতে হলেও এখন কালিয়াকৈরের সুযোগ্য সন্তানদের কালিয়াকৈরের জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করার পালা এবং এই নির্বাচনে তিনি একমাত্র কালিয়াকৈরের সন্তান, যিনি ভোটারদের কাছে কালিয়াকৈরের মাটি ও মানুষকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করার অহ্বান জানান। এ নির্বাচনে বিএনপি আসছে না। আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযোদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক গত ১৫ বছরে বহিরাগত এমপি হিসেবে অনেক কাজ করলেও কালিয়াকৈর উপজেলার তৃণমূলের বেকারত্ব, মাদক-সমস্যা ও স্থানীয় স্বার্থ রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছেন, যার অন্যতম কারণ তিনি কালিয়াকৈরের মাটি ও মানুষের সন্তান না। যেহেতু এ নির্বাচনে বিএনপি আসছে না, নির্বাচন সুষ্ঠু হলে বিরোধী ঘরানার ভোটগুলো চৌধুরী ইরাদ আহমেদ সিদ্দিকী পাবেন বলে তিনি মনে করেন।”
চৌধুরী ইরাদ আহমদ সিদ্দিকী আরও বলেন, “নির্বাচনের প্রকৃতি গণতন্ত্রের মাত্রা নির্ধারণ করে। আধুনিক প্রতিনিধিত্বশীল গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অন্যতম প্রধান অংশ হচ্ছে নির্বাচন। নির্দিষ্ট সময় অন্তর নির্বাচন অনুষ্ঠান ছাড়া কোনো রাষ্ট্রকে গণতান্ত্রিক বলা যায় না। যদি গণতান্ত্রিক সরকারকে সর্বোত্তম সরকার হিসেবে আখ্যায়িত করা যায়, তবে এর মূল স্তম্ভই হলো নির্বাচন এবং এই দুইয়ের মধ্যে গভীর সাযুজ্য রয়েছে।
বস্তুত, গণতন্ত্রে সরকারের ক্ষমতা উৎসারিত হয় ভোটারদের প্রদত্ত ম্যান্ডেট থেকে আর নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা জনগণের হয়ে প্রক্সি দেন। স্থিতিশীল রাজনৈতিক ব্যবস্থায় প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা অর্জনের প্রক্রিয়ায় ব্যাপকভিত্তিক জন-অংশগ্রহণের মাধ্যমে, বিশেষত সংখ্যাগরিষ্ঠ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কণ্ঠস্বর প্রকাশ ও তাদের প্রত্যাশা পূরণের পদ্ধতি উদ্ভাবনসহ যথাযথ প্রয়োগ নির্দেশ করে নির্বাচন। এর ফলে গণতন্ত্র ও উন্নয়নের মধ্যে ইতিবাচক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। প্রকৃতপক্ষে গণতন্ত্র বিকাশে ও সংহতকরণে নির্বাচনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অবদান সর্বজনস্বীকৃত।”