গাজনার বিলের কচুরিপানা অভিশাপ না আশীর্বাদ 

// বিশেষ প্রতিনিধিঃ

গাজনার বিল বা বিল গাজনা পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার বৃহত্তম বিল। বিলটি প্রায় ১৫ হাজার একর জমিতে ১৬ টি ছোট-বড় বিলের সমন্বয়ে তৈরি হয়েছে। এটি সুজানগর উপজেলার প্রায় মাঝখানে অবস্থিত। কৃষি ও মৎস্য শিকারের কারণে পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার অর্থনৈতিক উন্নয়ন অনেকাংশ এই বিলের উপর নির্ভরশীল। সুজানগর উপজেলার ১০ টি ইউনিয়নের সাথেই বিলটি সংযুক্ত রয়েছে। গাজনার বিলের পানির প্রধান উৎস পদ্মা ও যমুনা নদী এবং চলন বিল। গাজনার বিল ও পদ্মা নদীর সংযোগ কেন্দ্র হিসেবে রয়েছে “বাদাই সুইচ গেইট”। এই সুইচ গেইটটি বাঁধেরহাট-সুজানগর সড়কের (মুজিব বাঁধ বলে পরিচিত) সাগরকান্দি গ্রামে বাদাই নদের উপরে অবস্থিত। এই বিলপারের অধিকাংশ মানুষ মাছ শিকার ও পানি শুকিয়ে গেলে কৃষি কাজের উপর নির্ভরশীল। 

জানা যায় এই বিলের বিস্তৃত এলাকা জুড়ে কচুরিপানায় আচ্ছাদিত হয়ে আছে।  খবর পেয়ে সিএনএফ টিভি টিম গাজনার বিলে উপস্থিত হলে ঘটনার সত্যতা জানতে পারে। 

স্থানীয় মামুন হোসেন তার নৌকায় করে বিলের মধ্যে কাজ করা বিভিন্ন জেলে ও কৃষকদের কাছে নিয়ে যান। তাদের সাথে কথা বলে জানা যায় তারা বাঁশ কিনে নিজেদের জমির চারপাশে পুঁতে দিয়ে দড়ি বেঁধে  ঘিরে দিচ্ছেন যাতে কচুরিপানা দড়ি ভেদ করে জমির মধ্যে প্রবেশ করতে না পারে। এতে তাদের বাড়তি অর্থ খরচ ও পরিশ্রম করতে হচ্ছে যেটা খুবই দুঃখজনক।

 ইছামতি নদী উদ্ধার আন্দোলন পাবনার সাধারণ সম্পাদক ও জেলা কৃষক লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মতে পরিত্যক্ত জমিতে ফসল ফালাতে হলে  গাজনার বিলের কচুরিপানা অপসারণসহ দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে।

বিষয়টি সমাধানের কোন উপায় আছে কিনা জানতে চাইলে বাপাউবো বেড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী মুঠোফোনে প্রতিবেদকে  বলেন  নদীর প্রোটেকশন, পানির নাব্যতা, স্ট্রাকচার, পানির লেভেল এই সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে আমরা কাজ করে থাকি। কচুরিপানা দিয়ে জৈব সার তৈরি করার কোন প্রক্রিয়া আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন 

সারের বিষয়টা কৃষি অধিদপ্তরের, এটা আমি বলতে পারবোনা।

এ ব্যাপারে সুজানগর কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রাফিউল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি জানান  আসলে কচুরিপানা কৃষকদের অভিশাপ নয় এটা একটা আশীর্বাদ। কচুরিপানাগুলো জমির এক কোনায় একসাথে স্তুপাকারে রেখে তার উপরে মাটি দিয়ে লেপে দিলে ২০-২৫ দিনের মধ্যে সেটা জৈব সারে রূপান্তরিত হয়। তখন তারা সেই সার জমিতে ব্যবহার করতে পারে। আর এই বিষয়টি আমরা বিভিন্ন মাঠ দিবস ও উঠান বৈঠকের মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের  অনেকবার জানিয়েছি।