// হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে ক্যালসিয়াম। এর ঘাটতি হলে হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে। শুধু হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় নয় বরং শরীরের বিভিন্ন রোগ সারায় এই খনিজ উপাদান। যেমন- রক্ত জমাট বাধা, পেশির সংকোচন প্রসারণ ও হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখা। তবে শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি আছে কি না তা বুঝবেন কীভাবে?
ক্যালসিয়াম এক ধরনের খনিজ। যা আমাদের দেহের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শরীরের হাড় ও দাঁতের স্বাস্থ্য রক্ষা করে। শরীরে ক্যালসিয়াম অন্যান্য কার্যক্রমেও সহায়তা করে। যেমন- পেশি, ধমনীর সংকোচন ও স্নায়ুতন্ত্রের বার্তা সরবরাহ করতে সাহায্য করে। হৃৎপিণ্ডের বিভিন্ন অঙ্গেও ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন। শরীরে ক্যালসিয়াম ঘাটতি থাকলে বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়ে। যার মধ্যে অন্যতম হলো অস্টিওপোরোসিস ও অস্টিওপোনিয়া। ক্যালসিয়ামের অভাবে শিশুদের বিকাশ রোধ হয়। সাধারণত বাচ্চা ও বড়দের মধ্যে ক্যালসিয়ামের অভাব দেখা দেয়, যা একাধিক স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
ল্যাকটোজ ইনটলারেন্টদের ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণল্যাকটোজ ইনটলারেন্টদের ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ
ক্যালসিয়াম এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ যা সুস্থ হাড় ও দাঁতের জন্য জরুরি। স্নায়ু, পেশি ও হৃদযন্ত্রের সুষ্ঠু কার্যকারিতা বজায় রাখতেও এটা প্রয়োজনীয়।
রক্তে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ অত্যধিক হারে কমে যাওয়াকে হাইপোক্যালসেমিয়া বলা হয়। হাড়ের স্বাস্থ্যের অবক্ষয়ের মূল কারণ মূলত বার্ধক্য। শরীরে অন্য কোনও রোগ বাসা বাঁধলে আমরা যথেষ্ট সজাগ থাকি। তবে হাড়ের যত্নের ক্ষেত্রে অধিকাংশ মানুষই খুব উদাসীন। খাওয়া-দাওয়ায় অনিয়ম, শরীরচর্চা না করা, ভাজাপোড়া খাওয়ার অভ্যাসে হাড়ের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। বিশেষ করে যারা ধূমপান করেন, অল্প বয়সেই তাদের হাড়জনিত সমস্যা বাড়ে। হাড়ের সমস্যাগুলি শরীরে বাসা বাধার আগে কিছু উপসর্গ দেখা দেয়। সেগুলো নিয়ে সতর্ক হওয়া জরুরি। না হলে পরবর্তী সময়ে বড় সমস্যায় ভুগতে হতে পারে। হাড়ের ক্ষয় প্রতিরোধে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত মাত্রায় ক্যালসিয়াম রাখা প্রয়োজন। শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হলে হাড়ের নানা রকম অসুখ বাসা বাধে। শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব হলে শরীরই সে কথা জানান দেয়।
এছাড়াও ক্যালসিয়ামের অভাবে দেখা দেয় বিভিন্ন লক্ষণ যেমন- পা ও হাত ঝিঝি ধরা, অবশ হওয়া, ব্যথা, ক্লান্তি, হতাশা, দাঁতের ক্ষয়, পেশি ব্যথা ইত্যাদি।
কম পরিমাণে ক্যালসিয়াম গ্রহণ করা বা উচ্চমাত্রায় ক্যালসিয়াম উপস্থিত এমন খাদ্যের প্রতি আকর্ষণহীনতা একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর ক্যালসিয়ামের অভাবের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। এ ছাড়াও নারীদের মধ্যে হরমোনের পরিবর্তন বা কোনও জেনেটিক বিষয় ক্যালসিয়ামের স্তরকে প্রভাবিত করতে পারে। তাই বার বার দাঁতের সমস্যা, ক্লান্তি, শুষ্ক ত্বক, পেশি ব্যথা হলে এ বিষয়ে সতর্ক হতে হবে ও দ্রুত শরীরে ক্যালসিয়ামের মাত্রা বাড়তে পারে এমন খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। জেনে নিন, কোন কোন উপসর্গ দেখলে সতর্ক হবেন?
হাত ও পায়ে অসাড়তা ক্যালসিয়ামের অভাবের দিকে ইঙ্গিত করে। ক্যালসিয়ামের স্তর কমলে দুর্বলতা দেখা দেয়। এর ফলে ব্যক্তি সবসময় ক্লান্ত বোধ করবে এবং সারাদিন কাজ করার সামর্থ্য অর্জন করতে ব্যর্থ হবে।
শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হলেই পেশিতে ব্যথা, ক্র্যাম্প ও খিঁচুনি শুরু হয়। হাঁটাহাঁটি করার সময়ে হাঁটুতে ব্যথা হয়। এ ছাড়াও হাত, বাহু, পা ও মুখের চারপাশে অসাড়তাও অনুভব হতে পারে। আবার পেশি দুর্বলও হতে পারে। কারণ ক্যালসিয়ামের অভাবে পেশি স্বাভাবিক অবস্থায় থাকতে পারে না। এ ধরনের সমস্যা হলেই সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
ক্যালসিয়ামের ঘাটতির ফলে হাড়ের ঘনত্ব কমে যেতে পারে। একে অস্টিওপোরোসিস বলা হয়। এর ফলে হাড় জীর্ণ হয়ে পড়ে ও ফ্র্যাকচারের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।
ক্যালসিয়ামের স্তর কম হলে ত্বকে ময়েশ্চার ও স্বাস্থ্যকর পিএইচ বজায় রাখা যায় না। শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হলে ত্বক শুষ্ক, নখ ভাঙ্গা, চুল মোটা, একজিমা, ত্বকের প্রদাহ, ত্বকের চুলকানি ও সোরিয়াসিসের মতো সমস্যা হতে পারে। নখ ভেঙ্গে যাওয়া শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতির বড় লক্ষণ।
হাঁটলে কমবে কোলেস্টেরলহাঁটলে কমবে কোলেস্টেরল
শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হলেই পেশিতে ব্যথা, ক্র্যাম্প ও খিঁচুনি শুরু হয়। হাঁটাহাঁটি করার সময়ে হাঁটুতে ব্যথা হয়। এ ছাড়াও হাত, বাহু, পা ও মুখের চারপাশে অসাড়তাও অনুভব হতে পারে। এ ধরনের সমস্যা হলেই সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
ক্যালসিয়ামের অভাবে চরম ক্লান্তিভাব আসতে পারে। ক্লান্তি থেকেই যে কোনও কাজ করতে অনীহা আসে। এর প্রভাবে অনিদ্রার সমস্যা শুরু হয়। এছাড়া হালকা মাথাব্যথা, মাথা ঘোরানো ও ব্রেন ফগও হতে পারে। শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতির কারণে মনোযোগের অভাব, ভুলে যাওয়ার সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
মাড়ির রোগ ও দাঁত ক্ষয়ও ক্যালসিয়াম ঘাটতির অন্যতম লক্ষণ। দাঁতের স্বাস্থ্য বলে দিতে পারে শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব হয়েছে কি না। ক্যালসিয়াম দাঁতকে মজবুত করে। দাঁতে যন্ত্রণা, মাড়ি নরম হয়ে যাওয়া, মাড়ি থেকে রক্তপাত হলে সচেতন হন।
শরীরে ক্যালসিয়ামের সামগ্রিক মাত্রা কমে গেলে, শরীর হাড় থেকে ক্যালসিয়াম শুষে নেয়। এ কারণে হাড় ভঙ্গুর হয়ে ওঠে। অস্টিয়োপোরেসিসের মতো রোগ বাসা বাঁধে শরীরে।
হাইপোক্যালসেমিয়ার কারণে খিঁচুনি দেখা দিতে পারে। কারণ ক্যালসিয়ামের ঘাটতি মস্তিষ্ককে অতিরিক্ত উত্তেজিত করে তোলে।