// ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতাঃ
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে ঈশ্বরদীতে মসজিদের ইমাম, পুরোহিত ও সনাতন ধর্মাবলম্বিদের যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঈশ্বরদীর নবাগত উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুবীর কুমার দাশ বৃহস্পতিবার বিকেলে পরিষদ মিনায়তনে এ যৌথসভার আয়োজন করেন।
নবাগত ইউএনও বলেন, ধর্ম ও বিশ্বাসের ভিন্নতা সত্ত্বেও বাঙালি হিন্দু-মুসলিমের সংস্কৃতি অনেকাংশে সাদৃশ্যপূর্ণ। আমাদের সামাজিক বন্ধনও হৃদ্যতাপূর্ণ। হিন্দু-মুসলিমের মিলিত সংস্কৃতিই বাঙালি সংস্কৃতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। এখানে যেমন আজানের ধ্বনিতে মানুষের ঘুম ভাঙে তেমনি সূর্যাস্তের সময় শঙ্খধ্বনিও বেজে ওঠে। এ দেশের বোরকা পরিহিত মুসলিম আর সিঁদুর পরা হিন্দু নারীদের একসাথে ঘণ্টার পর ঘণ্টা গল্প করার অভ্যাস আছে। আবার ধূতি-তিলক পরা হিন্দু পুরোহিতদের সাথে পাজামা-পাঞ্জাবি-টুপি-দাড়িওয়ালা মৌলবিদের দারুণ আড্ডা জমে। ধর্মীয় কিছু বিধি-নিষেধ ছাড়া মৌলিক কোন পার্থক্য নাই বাঙালি হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায়ের খাদ্যাভ্যাসে। এমনিভাবে বাঙালি সংস্কৃতি হিন্দু-মুসলিম সংস্কৃতির সমন্বয়ে সমৃদ্ধ হয়েছে। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সুদৃঢ় করেছেন। কিন্তু অনেক সময় স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি-গোষ্ঠী বা দল ভিন্ন ধর্মের বিশ্বাস ও লোকদের ওপর আক্রমণ করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করেছে। বিভিন্ন সময় অতর্কিতভাবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়ি-ঘর ও ধর্মীয় উপসানলয়ে আক্রমণের ঘটনাও ঘটেছে। ঈশ্বরদীতে এযাবত কোন অপ্রীতিকর কোন ঘটনা ঘটেনি। আগামীতেও যাতে না ঘটে, এজন্যই আজ হিন্দু ও মুসলিম ভাইদের নিয়ে যৌথ মতবিনিময় ও পরিচিত সভা।
ইউএনও এসময় ইমাম, পুরোহিত, মসজিদ ও মন্দিরের সমস্যা নিরসনে উদ্যোগ গ্রহন করবেন বলে আশ্বস্থ করেন।
সভায় সহকারি কমিশনার (ভূমি) টি এ রাহসিন কবীর উপস্থিত ছিলেন। বক্তব্য রাখেন, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক স্বপন কুমার কুন্ডু, ইমাম সমিতির সভাপতি শহিদুল ইসলাম, পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সুনিল চক্রবর্তি, ইমাম সুলতান মাহমুদ, ইমাম মোসাদ্দেক আহম্মেদ মূসা, হিন্দু মহাজোটের দেবদুলাল রায়, দিপু রায় প্রমূখ।