ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতাঃ
ঈশ্বরদীতে রিকাশাচালক মামুনকে গুলি করে হত্যা মামলার তিন আসামীদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত একটি পিস্তল ও তিন রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, ঈশ্বরদী পৌর শহরের নূর উদ্দিনের ছেলে আনোয়ার উদ্দিন (৩৫) শৈলপাড়া বারোকোয়াটারের আকরাম হোসেন মিস্ত্রির ছেলে ইব্রাাহিম হোসেন (২৬)। পুলিশী তদন্তে হত্যাকান্ডে জড়িত একই এলাকার শহিদুল ইসলামের ছেলে সাকিবুর রহমান সাকিব গ্রেপ্তার হয়েছে। দায়েরকৃত মামলায় নামীয় আসামীদের মধ্যে সাকিবুর রহমান সাকিবের নাম ছিল না। মামলার অপর দুই আসামী পৌর কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি কামাল উদ্দিন এবং তার ভাতিজা হৃদয় হোসেনকে ৬ জানুয়ারি গ্রেপ্তার করে র্যাব। পুলিশ ও র্যাবের অভিযানে এ মামলার এ পর্যন্ত পাঁচ আসামী গ্রেফতার হয়েছে।
শনিবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয় চত্বরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী। তিনি বলেন, ঈশ্বরদীর পশ্চিমটেংরি এলাকায় ভুটভুটি ও পিকআপের (লেগুনা) সংঘর্ষে সামনের গ্লাস ভেঙে যায়। তার তিপূরণ আদায় করা নিয়ে স্থানীয়দের সাথে আনোয়ার হোসেনের শ্যালক সুজনের কথা কাটাকাটি হয়। সুজন ফোনে ঘটনা তার ভগ্নিপতি আনোয়ার হোসেনকে জানালে তিনি লোকজন নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হলে রকি,মামুন ,সুমন সহ আরো লোকজনের তর্কাতর্র্কি শুরু হয়। তর্কাতর্কীর ঘটনা এক পর্যায়ে সংঘর্ষে গড়ায়। এসময় আনোয়ারের গুলিতে রিকশাচালক মামুন মারা যায়।
এঘটনায় মামলা দায়েরের পর পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গত তিনদিন অভিযান চালিয়ে ঈশ্বরদীর আরামবাড়িয়া থেকে আনোয়ার, পাকশী থেকে ইব্রাহিম ও রাজশাহীর চারঘাট থেকে সাকিবুর রহমান সাকিবকে গ্রেপ্তার করে। এসময় হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত পিস্তল ও তিন রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত আনোয়ারের বিরুদ্ধে ঈশ্বরদী থানায় চুরি, মাদক ও মারামারির ৪টি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত ইব্রাহিম হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালকে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছে জানানো হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মাসুদ আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ঈশ্বরদী সার্কেল পাবনা বিপ্লব কুমার গোস্বামী, ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ অরবিন্দ সরকার, ইন্সপেক্টর তদন্ত হাদিউল ইসলাম, এস আই সুব্রত কুমার ঘোষ প্রেস বিফ্রিংয়ে উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গতঃ ৪ জানুয়ারি রাতে ঈশ্বরদীর পশ্চিমটেংরি কড়ইতলা এলাকায় শ্যালো মেশিনচালিত ভটভটির সঙ্গে লেগুনার সংঘর্ষে প্লাস ভাঙাকে কেন্দ্র করে বিরোধ হয়। দুই পরে কথা কাটাকাটি ও ধস্তাধস্তির ঘটনা সংঘর্ষে রূপ নেয়। স্থানীয়দের দাবি, একপর্যায়ে আনোয়ার হোসেন পিস্তল বের করে গুলি চালান। এতে রিকশাচালক মামুন হোসেন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।
পরদিন ৫ জানুযারী রাতে নিহত মামুনের মা লিপি খাতুন বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। মামলায় কাউন্সিলর কামাল উদ্দিনকে প্রধান করে তার ভাই আনোয়ার হোসেন, ভাতিজা হৃদয় হোসেন এবং ইব্রাহিমকে নামীয় এবং আরও ৩-৪ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।