নাটোরে ৭লাখ ৩০হাজার টাকার যুব গেমসে সিঙ্গারা,কেক খেয়ে দিন পার করলেন খোলোয়াড়রা

নাটোর প্রতিনিধি
বেশ জাঁকজমক পূর্ন আয়োজনের মধ্যে দিয়ে নাটোরে শেখ কামাল দ্বিতীয় বাংলাদেশ যুব গেমসের উদ্বোধন করা হয়। স্থানীয় সংসদ সদস্য সদস্য পর্বটা ছিল বেশ জাঁকজমক। নাচ,গান আর ডিসপ্লেতে মন জয় করে নেন অলি¤িপক এসোসিয়েশনের প্রতিনিধির। আগত অতিথিদের জন্যও আয়োজন করা হয় বেশ ভাল মানের নাস্তা। আর ভাল মানের নাস্তা হবেই না কেন, আগে থেকেই অলি¤িপক এসোসিয়েশন হালকা নাস্তার জন্য বরাদ্দ দিয়েছিলেন ২০হাজার টাকা।

এই পর্য়ন্ত সব ঠিকঠাক থাকলেও বিপত্তি ঘটে ইভেন্ট পরিচালনায়। জেলা ক্রীড়া সংস্থার পর্যাপ্ত কর্মকর্তা না থাকায়, আর মাঠে থাকলেও তাদের নিয়স্ক্রিয়তা অব্যবস্থাপনার মাত্রা চরমে ছাড়িয়ে যায়। ক্ষোদ বিরক্তি প্রকাশ করেন অলি¤িপক এ্যাসিয়েশনের প্রতিনিধি ও পর্যবেক্ষক।

দুই মাস আগে থেকেই শেখ কামাল দ্বিতীয় বাংলাদেশ যুব গেমসের নাটোর ভেন্যুতে খেলার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হলেও অব্যবস্থাপনা দেখে তা মনে হয়নি। আর কোন টাকা পয়না না পেয়ে সিঙ্গারা, কেক খেয়ে দিন পার করলেন নলডাঙ্গা উপজেলার ভলিবল খোলোয়ারা। নিজেদের পকেটের টাকায় ভাড়া দিয়ে এসে সিঙ্গারা, কেক খেয়ে চ্যা¤িপয়ন করে গেলেন দলকে। সেই সাথে ক্ষোভ ঝাড়লেন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।

নাটোর জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে দেওয়া বাংলাদেশ অলি¤িপক এসোসিয়েশনের বরাদ্দের চিঠি ঘেঁটে দেখা যায়, খাবারের জন্য খেলোয়াড়, প্রশিক্ষক, এবং ম্যানেজার জনপ্রতি সর্বোচ্চ দৈনিক পাবেন ৫০০টাকা করে, এছাড়া যাতায়াতের জন্য ২০০টাকা, মাঠ প্রস্তুতি ও সাজসজ্জা এবং প্রচার-প্রচারনার জন্য ৬০হাজার টাকা, খেলা পরিচালনাকারী টেকনিক্যাল অফিসিয়ালগণ (দুদিন) পাবেন ৪৮হাজার টাকা, হালকা আপ্যায়ন বাবদ ২০হাজার টাকা, চিকিৎসার জন্য ১০হাজার, প্রশাসনিক ও অণ্যান্যে সাংগঠনিক ব্যায়ের জন্য ২০ হাজার টাকা এবং জেলা দলের প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতির জন্য ৫০হাজার টাকা সহ মোট সাত লাখ ৩০হাজার ৬০০টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

নলডাঙ্গা উপজেলার ভলিবল দলের খোলোয়ার পাপ্পু বলেন, আমাদের আগে থেকে যুব গেমসের বিষয়ে জানানো হয়নি। হঠাৎ করেই জানানোর কারনে আমরা তেমন প্রস্তুতি নিতে পারিনি। তাছাড়া আমাদের নিজেদের পকেটের টাকা খরচ করে খেলতে এসেছি। দুপুরে কেউ সিঙ্গারা, কেউ কেক খেয়ে দিন পার করেছে। একটু খাবারও জুটেনি আমাদের।

নলডাঙ্গা উপজেলার ভলিবল দলের অধিনায়ক তুষার বলেন, আমরা চরম অবহেলার শিকার হয়েছি। দুপুরে তো ভাত জুটেইনি। যাতাযাতের টাকাও দেওয়া হয়নি। তারপরও আমরা চ্যা¤িপয়ন হয়েছি।

টাকা না দেওয়ার অভিযোগ করেছেন আরও কয়েকজন খেলোয়ার। অথচ প্রতিটি অংশগ্রহনকারীকে যাতাযাতের জন্য দুইশ টাকা এককালীন দেওয়ার বলা হয়েছে জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে।

অলি¤িপ অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি একেএম আব্দুল মবিন বলেন, ইভেন্টগুলো ভাল ভাবে শেষ করার জন্য আগেই অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ভলিবলে নলডাঙ্গা উপজেলার খেলোয়ার অভিযোগ করলেন, তারা নিজেদের টাকায় ভাড়া দিয়ে এসেছে। দুপুরের খাবার পায়নি। তাছাড়া কেউ কেউ সিঙ্গারা, কেক খেয়ে দিন পার করেছে। এটা খুব দু:খজনক। বাকিটা অলি¤িপক অ্যাসোসিয়েশনের কাছে আমার রিপোর্টে জানাবো।

রাজশাহী বিভাগের পর্যবেক্ষক ইদ্রিস আলী বলেন, ইভেন্টগুলো যাতে ভাল ভাবে স¤পন্ন হয়, সেজন্য অলি¤িপক অ্যাসোসিয়েশন আমাকে নাটোরে পাঠিয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ভাল হলেও এখানে যতগুলো ইভেন্ট হচ্ছে, বেশির ভাগ অনিয়ম হয়েছে। আমরা খেলোয়ার, কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে অনিয়ম এবং চরম অব্যবস্থাপনা দেখতে পেয়েছি। আমি অলি¤িপক অ্যাসোসিয়েশনের সভায় নাটোরের অব্যবস্থাপনার বিষয়ে তুলে ধরবো।

শেখ কামাল দ্বিতীয় বাংলাদেশ যুব গেম পরিচালনা কমিটির আহবায়ক ও নাটোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নাদিম সারওয়ার কে তার সরকারী সেল ফোন নম্বরে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।