চলনবিল অধ্যুষিত নাটোরের গুরুদাসপুরে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। পানি কিছুটা কমলেও চরম দুর্ভোগে দিন কাটাতে হচ্ছে বন্যা কবলিত এলাকার মানুষদের। তাদের ঘরবাড়ি কোনো কিছুই যেন ঠিক নেই। অনেকের ঘরের বেড়া ভেঙে গেছে। খুঁটি নড়বড়ে হয়ে গেছে। কারো ঘরের চাল ভেঙে পড়েছে। ভেসে গেছে খেতের ফসল ও পুকুরের মাছ।
সেইসঙ্গে দেখা দিয়েছে আমাশয়-ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগ। বাড়ছে স্যানিটেশন সমস্যা এবং খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট। পানি বৃদ্ধির কারণে বিষাক্ত সাপের উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় এবং গাদাগাদি করে থাকায় করোনার বিস্তার লাভের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। যার ফলে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে অতিকষ্টে জীবনযাপন করছেন পানিবন্দি এসব অসহায় পরিবার।
উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, এবারের বন্যায় উপজেলার প্রায় ৬টি ইউনিয়নই কমবেশি প্লাবিত হয়েছে। কিছু এলাকায় নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। পাশাপাশি মৎস্য খামার, ফসলি জমি, সবজি, গাছপালা, গবাদি পশুর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শিশু ও বয়স্করা পানিতে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন। বন্যা কবলিত এই বিশাল জনগোষ্ঠীর মাঝে নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন ব্যবস্থা ও খাদ্য সংকটের পাশাপাশি গো খাদ্যের অভাবে গরু-ছাগল নিয়ে বিপাকে পড়েছে অনেকেই। নিরাপদ আশ্রয়সহ নানা সংকটে এ অঞ্চলের বন্যা কবলিত মানুষরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। দিশেহারা হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।
বন্যা দুর্গত এলাকার বাসিন্দারা জানান, করোনা ভাইরাস সংকটের কারণে বেশ কিছুদিন থেকে আয়রোজগার বন্ধ। তার ওপর বন্যা অভাব আরও বাড়িয়েছে। থাকার জায়গার অভাবে হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল ও পশুখাদ্য কম দামে বিক্রি করে দিয়েছেন অনেকে। ঘরে পানি উঠে বন্ধ হয়ে গেছে রান্নাবান্না। এসময় ত্রাণ সহায়তার জন্য প্রশাসনের নিকট জোর দাবী জানান তারা।