যশোর সিভিল সার্জনের কাছে ইমরানের ডোপ টেস্ট রিপোর্ট চেয়েছেন হাইকোর্ট

ইয়ানূর রহমান : যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটির সাজিয়ালী ক্যাম্প পুলিশের নির্মম নির্যাতনে কিডনী অকেজো হয়ে যাওয়া কলেজছাত্র ইমরান হোসেনের
স্বাস্থ্যগত ও পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন উপস্থানের পর এবার সিভিল সার্জনের কাছে ডোপ টেস্টের রিপোর্ট চেয়েছেন উচ্চ আদালত (হাইকোর্ট । রোববার বিচারপতি জে বি এম হাসানের ভার্চ্যুয়াল উচ্চ আদালত বেঞ্চ এই আদেশ দিয়েছেন।

ডোপ টেস্ট রিপোর্টের সাথে কলেজ ছাত্র ইমরানের চিকিৎসা ও পরীক্ষা নিরীক্ষার যাবতীয় কাগজপত্র আগামী ৫ জুলাইয়রে মধ্যে জমা দিতে বলা
হয়েছে। তবে যশোরের সিভিল সার্জন জানিয়েছেন রোববার রাত ৯টা পর্যন্ত এই সংক্রান্ত আদেশ পত্র তিনি হাতে পাননি।

যশোর সদর উপজেলার হৈবতপুর ইউনিয়নের শাহাবাজপুর গ্রামের নিকার আলীর ছেলে কলেজছাত্র ইমরান হোসেনকে গত ৩ জুন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে ধাওয়া করে ধরে সাজিয়ালী ক্যাম্প পুলিশ নির্যাতন করে। নির্যাতনে তার দুটি কিডনি বিকল হয়ে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন। এই ঘটনায় ৯ জুন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক-সার্কেল গোলাম রব্বানীকে প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন হয়। কমিটির অন্য দুজন হলেন কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান ও পুলিশের বিশেষ শাখার ডিআই-ওয়ান ইনসপেক্টর মশিয়ূর রহমান। ১২ জুন পুলিশ সুপারের কাছে কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।

এরমধ্যেই সাজিয়ালী পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই মুন্সি আনিসুর রহমান, এএসআই সুমারেশ সাহা এএসআই সারজার রহমান ও পুলিশ কনস্টেবল ফারুককে ক্লোজড করে যশোর পুলিশ লাইনে আনা।এদিকে ইমরানের নির্যাতনের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পর নির্যাতনের অভিযোগে বিচারিক তদন্ত ও ভুক্তভোগীকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির ও মোহাম্মদ কাউছার ১৮ জুন রিট জমা দেন।

এর শুনানি নিয়ে ২৩ জুন উচ্চ আদালত যশোরের পুলিশ সুপার ও সিভিল সার্জনকে ওই শিক্ষার্থীর স্বাস্থ্যগত প্রতিবেদন এবং ওই ঘটনায় পুলিশের গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট রাষ্ট্রপক্ষের মাধ্যমে ২৮ জুনের মধ্যে দাখিল করতে নির্দেশ দেন। সেই অনযায়ী রোববার প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতিতে আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস। রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আবেদনকারী আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস পরে বলেন, ওই ঘটনায় পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন ও কলেজছাত্র ইমরান হোসেনের স্বাস্থ্যগত প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীর কিডনি এখন স্বাভাবিকভাবে কাজ করছে ও তার শারীরিক অবস্থা ভালো বলে সিভিল সার্জনের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

আর ইমরানের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি বলে পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এ অবস্থায় আদালত ওই কলেজছাত্রের ডোপ টেস্টের রিপোর্টসহ চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্র দাখিল করতে সিভিল সার্জনকে নির্দেশ দিয়েছেন। রোববার রাতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন জানিয়েছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ইমরান হোসেনের স্বাস্থ্যগত প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছি। শুনানিতে তার ডোপ টেস্টের রিপোর্ট চেয়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা পত্র এখনো আমি হাতে পায়নি।