মৌলভীবাজারে শ্রীমঙ্গল রোডস্থ নিউ লাইফ
ডায়াগনষ্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারে দূষিত ও ভেজাল রক্ত বিক্রয় করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে উক্ত প্রতিষ্ঠানে রোগীর সঠিক রির্পোট দিতেও ব্যর্থ হচ্ছে। কাগজে কলমে তাদের প্যাথলজিস্ট, মেডিসিন পরীক্ষাগার বা ট্যাকনেশিয়ান থাকলেও বাস্তবে নেই। পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই ভুয়া রিপোর্টে স্বাক্ষর জাল করে ঝুঁকিপূর্ণ উপায়ে রক্ত বিক্রি হচ্ছে।
ঘঠনার সত্যতা জানতে এ প্রতিবেদক মৌলভীবাজার শহরের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন জেলা সদরের সরকার বাজার এলাকার (গর্ভবর্তী
নারী) বাবলী বেগম (৩০) ও তার স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা যায়- গত ২৯ মে “নিউ লাইফ ডায়াগনষ্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টার” থেকে দুই ব্যাগ রক্ত ৬ হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় করেন। ডাক্তার তাদের দেওয়া রক্ত রোগীর শরীরে পুশ করার পর শরীরে নানা সমস্যা সৃষ্টি হতে থাকে। দূষিত ও ভেজাল রক্ত দেয়ার কারণে আরও জটিল আকার ধারণ করেছে। মারাত্মকভাবে রোগাক্রান্ত ও বিপন্ন হয়ে
পড়েছে। ৬ হাজার টাকা দিয়ে রক্ত কিনে রোগী সুস্থ হওয়ার বদলে প্রাণ কেড়ে নেওয়ার মত অবস্থা। যত সময় যাচ্ছে রোগীর অবস্থা অনিশ্চিত এবং ভয়ঙ্কর হয়ে পড়েছে। একাধিক লোকজন বলেন- এইডস, হেপাটাইটিস-বি, হেপাটাইটিস-সি, সিফিলিসসহ বিভিন্ন সংক্রামক রোগের জীবাণু পরীক্ষার পর রক্ত নেবার নিয়ম থাকলেও তা মানা হয় না। জীবনের অন্যতম উপাদান রক্তেও ভেজাল হচ্ছে বলে সম্প্রতি টিভি চ্যানেল, প্রিন্ট ও অনলাইন গণমাধ্যমে
সংবাদ প্রকাশিত হলেও বন্ধ হচ্ছেনা এসব প্রতারণা। পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই রক্ত বিক্রি হচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিক ও হাসপাতালে।
চিকিৎসক, প্যাথলজিস্ট বা ট্যাকনেশিয়ান এর স্বাক্ষর জাল করেও বেঁচা- কেনা হচ্ছে ভেজাল ও নকল রক্ত। সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান চালিয়ে বেআইনীভাবে গড়ে ওঠা ব-াডব্যাংক ও ক্লিনিক চিহ্নিত করে এসব অবৈধ ব্যবসায়ের সঙ্গে সংশি-ষ্টদের গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়। কিন্তু, তবুও বন্ধ হচ্ছেনা প্রতারণা। এ ব্যপারে জানতে চাইলে নিউ লাইফ ডায়াগনষ্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারের মেডিসিন পরীক্ষাগার রাকিবুল হাসান আজ ৩০ মে বিকাল ৫টা ৫৫ মিঃ মুঠোফোনে জানান-ঈদের আগের দিন অর্থাৎ (২৩/০৫/২০২০ইং) থেকে গ্রামের বাড়ীতে ছুটিতে আছেন। তিনি এসব কিছুই জানেননা। আপনার স্বাক্ষরিত গত ২৯/০৫/২০২০ইং) তারিখে নিউ লাইফ ডায়াগনষ্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারের রির্পোট প্রদান সাপেক্ষে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন একজন গর্ভবর্তী রোগীর শরীরে রক্ত পুশ করা হয়েছে। বর্তমানে তার শরীরে রক্ত দেয়ার কারনে নানা সমস্য হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন- বিষয়টি
আমার বস এর সাথে আলাপ করতে হবে। এ ব্যপারে জানতে চাইলে মৌলভীবাজার ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ আল-আমিন বলেন- পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই রক্ত বিক্রি করা অথবা, প্যাথলজিস্ট বা ট্যাকনেশিয়ান এর অনুপস্থিতে স্বাক্ষর দিয়ে রির্পোট প্রদান করা প্রতারণার সামিল। মানুষ নীতি-নৈতিকতার মাথা খেয়ে কতটা নীচে নামলে ভেজাল, নকল ও পরীক্ষা ছাড়াই রক্ত সংগ্রহ করে বিপন্ন রোগীদের কাছে বিক্রি করতে পারে, তা ভাবলে আতঙ্কিত হওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। এ ব্যপারে জানতে চাইলে মৌলভীবাজার সিভিল সার্জন ডা. তৌহিদ আহমদ বলেন- রক্ত বেঁচা-
কেনা বেআইনী। এ ধরনের অনেক অভিযোগ উঠে। সিংহবাগ মানুষ অসেচতন। তার সুয়োগ নেয় কিছু অসাধু লোকজন। তিনি অপর এক প্রশ্নের জবাবে বলেন- ভদ্র লোক কখনো রক্ত বিক্রি করতে পারেনা। ভদ্রলোক রক্ত দিয়ে সহায়তা করেন। অনেক সময় মাদকাসক্ত লোকজন রক্ত বেঁচা কেনা করে। এ
বিষয়ে জেলা প্রশাসন অথবা আমার কার্যালয়ে ভুক্তভোগী অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করব।