পাটগ্রামের পোশাক শ্রমিক মৌসুমীর লাশ দাফনে বাধা দিয়ে ছিলেন বুড়িমারী ইউপি চেয়ার‌ম্যান নিশাত ঃ তদন্ত কমিটি

লালমনিরহােটের পাটগ্রাম উপজেলার পোশাক শ্রমিক মাহমুদা বেগম মৌসুমীর (২২) লাশ দাফনে বাধা দিয়ে ছিলেন পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ নেওয়াজ নিশাত। সে ঢাকা থেকে ট্রাকযোগে ফেরার পথে রংপুরে মৃত্যবরন করে। জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কমিটি ঘটনাটি তদন্তের পর এ তথ্য জানান ডিসি আবু জাফর। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে বৃহস্পতিবার (২৮ মে) চিঠি পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।    
উল্লেখ্য, পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নের উফারমারা গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা গোলাম মোস্তফার একমাত্র মেয়ে পোশাক শ্রমিক মাহমুদা বেগম মৌসুমী গত ২২ মে ঢাকা থেকে ট্রাকে বাড়ি ফেরার পথে মারা যান। ৯৯৯-এ সংবাদ পেয়ে মৌসুমীর লাশ উদ্ধার করে রংপুর তাজহাট থানা পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে বাবা গোলাম মোস্তফার কাছে ২৩ মে লাশ হস্তান্তর করে তারা। এরই মধ্যে সে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে বলে বুড়িমারীতে গুজব রটে। স্থানীয়রা লাশ এলাকায় প্রবেশে বাধা দিলে ইউপি চেয়ারম্যান শাহ নেওয়াজ নিশাতের কাছে ফোন করেন মেয়েটির বাবা গোলাম মোস্তফা। কিন্তু তিনিও অনুমতি না দিলে লাশ দাফনের জন্য অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভারকে পাঁচ হাজার টাকা দেন গোলাম মোস্তফা। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার লাশটি দাফন না করে তিস্তা নদীতে ভাসিয়ে দেন। সেই লাশ নদী থেকে উদ্ধার করে দাফনের ব্যবস্থা করে আদিতমারী থানা পুলিশ।                                                    
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, লালমনিরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও স্থানীয় সরকার বিভাগের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক(ডিডি) রফিকুল ইসলাম গত ২৬ মে সরেজমিনে ঘটনা তদন্তে বুড়িমারী ইউনিয়নে যান। তদন্ত শেষে জেলা প্রশাসক বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করেন। লাশ দাফনে বাধা দেওয়ার সঙ্গে ইউপি চেয়ারম্যানের সম্পৃক্ততা ছিল বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।  
লালমনিরহাট জেলা পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা বলেন, ‘কল লিস্ট যাচাই-বাছাই করে জানা গেছে, নিহত মৌসুমির বাবা লাশ দাফনে অনুমতির জন্য বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলেছিলেন। ওই সময় চেয়ারম্যান লাশ এলাকায় দাফনে বাধা দেন। এ বিষয়ে ইউডি মামলা হয়েছে। মৃত্যুর কারণ এবং লাশ দাফনে বাধা দেওয়ার বিষয়ে অধিকতর তদন্ত চলছে।’
জানতে চাইলে মৌসুমীর বাবা বলেন, ’সরকারের কাছে আমি ন্যায় বিচার চাই’।