ব্যক্তি উদ্যোগে করোনা সংকটকালে এবং ঈদকে সামনে রেখে প্রয়াত
শামসুর রহমান শরীফ এমপি’র সহধর্মিনী ও সন্তানরা ঈশ্বরদী এবং আটঘোরিয়ার
দরিদ্র ও অসহায় মানুষের মাঝে ধারাবাহিকভাবে খাদ্যসামগ্রী বিতরণে অনন্য
দৃষ্টান্ত স্থাপন করেেলন। শনিবার বিকেলে আটঘোরিয়ার একদন্ত ইউনিয়নে করোনা
পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে পড়া তাঁতী ও অন্যান্যদের মাঝে ঈদ উপহার হিসেবে এক
হাজার খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন পুত্র উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য গালিবুর
রহমান শরীফ। ওইদিন ঈশ্বরদী সাউথ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আরেক পুত্র, আওয়ামী
লীগের কেন্দ্রিয় শিল্প ও বাণিজ্য উপ-কমিটির সাবেক সদস্য সাকিবুর রহমান শরীফ
সাত শতাধিক মানুষের মাঝে সহযোগিতা বিতরণ করেন। একদন্তে ত্রাণ
বিতরণের সময় গালিব শরীফ জানান, আমার ‘মা’ উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি
কামরুন্নহার শরীফের নির্দেশে ঈদের আগেরদিন পর্যন্ত ঈশ্বরদী ও আটঘোরিয়া
উপজেলায় ২৫ হাজার পরিবারের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণের লক্ষ্য নিয়ে কাজ
করছি। রবিবার সকাল ও বিকেলে আমরা ভাইয়েরা মিলে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করব
ইনসাল্লাহ। এসময় একদন্ত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইসরাইল হোসেন সরদার, রেল
শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা জাহাঙ্গির হোসেনসহ আওয়ামী লীগ ও অংগ সংগঠনের
নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। এরআগে ২০১৮ সালে তদানিন্তন ভূমিমন্ত্রী জনাব
শরীফ জীবিত অবস্থায় দুই উপজেলায় ৫০ হাজার কম্বল বিতরণ করেছিলেন। তবে
স্বাধীনতা উত্তরকালে ব্যক্তিগত উদ্যোগে খাদ্যসামগ্রী বিতরণে এটাই এই এলাকায়
সর্বোচ্চ দৃষ্টান্ত বলে বিশিষ্ঠজনরা জানিয়েছেন।
মার্চ মাসে করোনা
পরিস্থিতির শুরু হতেই শরীফ পুত্র, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় শিল্প ও বাণিজ্য
উপ-কমিটির সাবেক সদস্য সাকিবুর রহমান শরীফ ঈশ্বরদীতে অসহায় মানুষের মধ্যে
সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে খাদ্যসামগ্রী ও স্যানিটাইজার বিতরণ শুরু করেন। সেসময়
জনাব শরীফ অসুস্থ অবস্থায় ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এই অবস্থায়
গত ২রা এপ্রিল তিনি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। করোনার কারণে দোয়া ও মিলাদ
মাহফিল এবং চেহলাম অনুষ্ঠিত করা সম্ভব না হওয়ায় মরহুমের স্ত্রী ও সন্তানেরা
পারিবারিক বিপর্যয়কে পাশ কাটিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষের পাশে এসে
দাঁড়িয়েছেন। লক্ষিকুন্ডায় পৈত্রিক বাড়িতে পারিবারিকভাবে মিলাদ অনুষ্ঠানের
পর এযাবত ঈশ্বরদী ও আটঘোরিয়ায় জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে হতদরিদ্র ও
নিম্নআয়ের পরিবারের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করছেন। মরহুমের আত্মার
মাগফেরাত কামনা করে এবং আসন্ন ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে এসব খাদ্যসামগ্রী
বিতরণ করা হচ্ছে।
সাকিবুর রহমান শরীফ কনক বলেন, আমার মমতাময়ী মা
সারাজীবন বাবার রাজনৈতিক কার্যক্রমে সহযোগিতা করেছেন। বাবা যখন ঢাকায়
থাকতেন তখন ঈশ্বরদী ও আটঘোরিয়ার মানুষকে আমার মা সকল দিক হতে আগলে রাখতেন।
তিনি বলেছেন, এলাকার কোন মানুষই যেন এই দুঃসময়ে না খেতে পেয়ে কষ্ট ভোগ করে।
তাই আমরা পারিবারিকভাবে মানুষের পাশে এসে দঁড়িয়েছি। এই দঃসময় হতে মানুষ
যতদিন পরিত্রাণ না পাবে আমরা ততদিন সহযোগিতা করেই যাবো।
আটঘোরিয়ার
বর্ষিয়ান আওয়ামী লীগ নেতা ও একদন্ত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বলেন, স্বাধীনতা
যুদ্ধের পর ব্যক্তিগতভাবে কাউকে এ্যাতো সাহায্য দিতে আমি দেখিনি। আজ আমাদের
নেতা নাই। এই দুঃসময়ে তাঁর সন্তানরা অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে
ধারাবাহিকভাবে ত্রাণ বিতরণ করে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থপান করলেন। যদি তাঁর
স্ত্রী ও সন্তানেরা এই দূর্যোগ মোকাবেলায় এগিয়ে না আসতো তাহলে অনেকেকেই
কষ্ট ভোগ করতে হতো।
পাকশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনামুল হক বিশ্বাস
জানান, এলাকার প্রতিটি ইউনিয়নেই আমার নেতা মরহুম ডিলু সাহেবের ছেলেরা একের
পর এক খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করছেন। এজন্য তিনি মরহুমের আত্মার মাগফেরাত এবং
তার পরিবারের মঙ্গল কামনা করেন।