প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের গতিবিধি পর্যবেক্ষণে চালু হয়েছে ‘কভিড-১৯ ট্র্যাকার’। এই ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে ঘাতক ভাইরাসটি দেশজুড়ে কিভাবে ছড়াচ্ছে প্রতিমুহূর্তে এর হালনাগাদ তথ্যচিত্র প্রকাশ করা হচ্ছে। বাংলায় এই ওয়েব পোর্টালে (http://covid19tracker.gov.bd) প্রতিমুহূর্তে জানা যাচ্ছে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়াও নতুন সংক্রমিত রোগী, মোট মৃতের সংখ্যা, সুস্থ, সঙ্কটাপূর্ণ এবং মৃত্যুহারের সর্বশেষ তথ্য।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ ও বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের উদ্যোগে আজ সোমবার রাতে এক ভার্চুয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে কোভিড-১৯ ট্র্যাকারের উদ্বোধন করেন প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে জানানো হয়, করোনাভাইরাসের সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে বাংলা ভাষায় গ্রাফচিত্রসহ মানচিত্র ভিত্তিক ‘কভিড-১৯ ট্রাকার’ তৈরি করেছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। ডেটা বিশ্লেষণের মাধ্যমে টেক্সট এবং টেব্যুলার শিটের মাধ্যমেও তুলে ধরে হচ্ছে ভাইরাসটি প্রভাবক চিত্র। এর মাধ্যমে বাংলা এবং ইংরেজি দুই ভাষাতেই প্রয়োজনীয় ডেটা বা তথ্য অনুসন্ধানের সুযোগ রয়েছে। প্রয়োজনে টেব্যুলার ফরমেট থেকে ডেটা ফিল্টার ও এক্সপোর্ট করা যাবে।
বাংলাদেশের পাশাপাশি ওয়াল্ড মিটার.ইনফো থেকে ডেটা সংগ্রহ করে তুলে ধরা হয়েছে বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতি। ফলে দেশের বিভিন্ন জেলার চালচিত্রের পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের করোনা সংক্রমণের চিত্রও তুলে ধরা হচ্ছে এর মাধ্যমে। প্রতি ৫-১০ মিনিট অন্তর হালনাগাদ হচ্ছে তথ্যগুলো। ওয়েবের পাশাপাশি মোবাইল সংস্করণেও মিলছে এই মাল্টিমিডিয়া তথ্যসেবাটি। আবার এপিআই ব্যবহার করে এই ডেটা যেকোনো ওয়েব পোর্টালেও ব্যবহারের সুবিধা দিচ্ছে কভিড-১৯ ট্র্যাকার।
সংবাদ সম্মেলনে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণজনিত সকল তথ্যাদি জানতে এই ট্রাকার অত্যন্ত গুরুত্ব ভূমিকা পালন করবে।
ডিজিটাল প্রযুক্তিতে আত্মনির্ভরশীল হতে কৌশলপত্র তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে আইসিটি বিভাগ। এই কৌশলপত্রে দেশেই ডিজিটাল রূপান্তরের জন্য প্রয়োজনী হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার এবং অ্যাপ্লিকেশন উৎপাদনে সক্ষমতার বিষয়ক পরিকল্পনা তুলে ধরা হবে। আগামী তিন বছরে খাদ্য ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য উৎপাদনে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা প্রতিপালনের অংশ হিসেবে এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, জনগণের নিকট জরুরি খাদ্য পৌঁছে দিতে হট লাইন ৩৩৩#২ এবং এক জেলা থেকে অন্য জেলায় খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে হট লাইন ৩৩৩#২ চালু, করোনসহ বিভিন্ন সংকট মোকাবিলায় প্রযুক্তিনির্ভর সমাধানের লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।
তিনি বলেছেন, এমআইএসটি, শাস্ট ও বুয়েট ছাড়াও ওয়ালটন এবং মাইওয়ান ভেন্টিলেটর তৈরির কাজ শুরু করেছে। সপ্তাহ খানেকের মধ্যে এর দেশে তৈরি ভেন্টিলেটর সরবরাহে ইতিবাচক খবর জানানো সম্ভব হবে।
জিও ফেন্সিং টেকনোলজির মাধ্যমে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তিদের অবস্থান নিশ্চিত করা এবং করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা এড়াতে ইসরাইল, সিঙ্গাপুরের মতো বাংলাদেশেও মোবাইল অ্যাপ চালু প্রসঙ্গে জানে চাইলে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, আমরা এ বিষয়ে কাজ করছি। আশাকরি খুব শিগগিরই এটি চালু করতে পারবো।
তিনি বলেন, মাঠপর্যায়ে এসব প্ল্যাটফর্মের ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রচারণা জোরদার করা হবে। প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় বিজ্ঞাপনের বিষয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা চাওয়া হবে বলে জানান তিনি।
ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে আইসিটি সচিব এন এম জিয়াউল আলম, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক পার্থ প্রতিম দেব আইসিটি বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।