মানুষের অসতর্কতার কারণে দেশে দ্রুত ছড়াচ্ছে করোনা ভাইরাস (কোভিড ১৯)। ক্রমেই আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দেশবাসীকে নানা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না যাওয়া। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তর মানুষকে ঘরে রাখতে তৎপর রয়েছেন। তবে মানুষকে বিভিন্ন প্রয়োজনে ঘরের বাইরে যেতেই হচ্ছে। বিশেষ করে মানুষ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য দ্রব্য কিনতে ঝুঁকি নিয়ে মুদিখানার দোকানে সমাগম ঘটাচ্ছে।
এ পরিস্থিতিতে পাবনার ভাঙ্গুড়ার মানুষকে ঘরে রাখতে শুক্রবার থেকে পৌরশহরে ‘ফ্রি হোম ডেলিভারি’ শপ চালু করেছেন কয়েকজন যুবক। ভাঙ্গুড়া বাজারের স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী এ প্রতিষ্ঠানটিতে পণ্য সরবরাহের মাধ্যমে সার্বিক সহযোগিতা করছে। সরকার নির্ধারিত স্বাভাবিক বাজার মূল্যে পারিবারিক নিত্যপয়োজনীয় পণ্য বিক্রয় করা হয় এই দোকানে। এই দোকান থেকে কোনো পণ্য কিনতে হলে ক্রেতাকে বাজারে আসতে হবে না।
প্রতিষ্ঠানটির মোবাইল নাম্বারে (০১৮৯২২০১৯৮২, ০১৮৭৭৯৯১৩৬৭) অর্ডার করলেই প্রয়োজনীয় পণ্য পৌঁছে দেয়া হচ্ছে ক্রেতার বাসায়। পণ্য পৌঁছে দিতে নেয়া হয় না কোনো অতিরিক্ত চার্জ। এছাড়া পণ্য হাতে পাওয়ার পরে মূল্য পরিশোধ করতে হয় ক্রেতাকে। এরইমধ্যে এই সেবাটি ভাঙ্গুড়া পৌর শহর সহ আশেপাশের এলাকার মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। প্রতিদিনই ক্রেতাদের পণ্য ক্রয়ের অর্ডার বাড়ছে। এখন পৌর শহরের বাসিন্দারা শুধুমাত্র নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য কেনার জন্য আর বাজারে আসছেন না।
‘ফ্রি হোম ডেলিভারি’ শপ থেকে পণ্য কেনা উপজেলার চরভাঙ্গুড়া গ্রামের বাসিন্দা জহুরুল ইসলাম বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে এ ধরনের সেবা মানুষকে ঘরে রাখতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। মানুষের সবচেয়ে বেশি দরকার হয় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। আর এসব পণ্য কিনতে মানুষকে বাড়ির বাইরে যেতে হয়। তাই এই সেবার ফলে ভাঙ্গুড়া পৌর সহ আশেপাশের এলাকার মানুষ বাড়ির বাইরে না গিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নির্ধারিত মূল্যে পেয়ে যাচ্ছে। এর জন্য মানুষকে বাড়তি খরচ দিতেও হচ্ছে না। প্রতিটি পণ্যের মূল্য স্বাভাবিক। তাই আমি প্রায় ৫ হাজার টাকার জিনিস এই দোকান থেকে অর্ডার করে কিনেছি। অর্ডার করার কিছুক্ষণ পরেই ওই প্রতিষ্ঠানের সদস্যরা আমার বাসায় এসে পণ্য পৌঁছে দিয়েছে।
সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ আসলাম আলী বলেন, কোনো লাভের উদ্দেশ্যে নয়। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে মানুষকে ঘরে রাখতেই এই সেবামূলক কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। আমরা চাই মানুষ তুচ্ছ প্রয়োজনে যেন ঘরের বাইরে বের না হয়। সকলেই ঘরে অবস্থান করে করোনা ভাইরাস থেকে নিরাপদে থাকুক।