রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ নির্মাণ প্রকল্প ও ঈশ্বরদী ইপিজেড এর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ১২টি দেশের প্রায় ২ হাজার বিদেশী নাগরিক ঈশ্বরদীতে বসবাস করছে। এসব বিদেশী নাগরিক অবাধে ঈশ্বরদী বাজার ও বিভিন্ন স্থানে অবাধে চলাচল করছে। দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমনের খবর সরকারিভাবে ঘোষণার পরপরই ঈশ্বরদীতে করোনা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা মনে করেন, এসব বিদেশী নাগরিক প্রায়ই নিজ দেশে যাতায়াত করেন এবং রূপপুর প্রকল্প ও ইপিজেড-এর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত পরিদর্শনে আসছেন বিদেশীরা। এসব বিদেশীদের দ্বারা করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আতংকিত হয়ে পড়েছেন স্থানীয়রা। এব্যাপারে ঈশ্বরদী শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি শফিকুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, প্রতিদিনই ঈশ্বরদী বাজারে ২-৩ শতাধিক বিদেশী নাগরিক নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র কিনতে আসেন। এসব বিদেশীদের মাধ্যমে করোনা ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে কেউ কেউ আশংকা করছে। সরকারি নিয়ম-কানুন ও পদক্ষেপ সম্পর্কে ভাল ধারণা না থাকায় ব্যবসায়ীসহ অন্যান্যরা ভয় পাচ্ছেন। তবে আমরা ব্যবসায়ীসহ সকলকে সচেতন করার জন্য নিয়মিত কাজ করছি।
জানা যায়, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ নির্মাণ প্রকল্পে রাশিয়া, জার্মান, ভারত, বেলারুশ ও ইউক্রেনের প্রায় ১ হাজার ৮শ’ নাগরিক কর্মরত রয়েছেন। এই সংখ্যা যাতায়তের কারণে প্রতিনিয়ত ১০০ কমবেশী হয়। এদের বেশীরভাগই রাশিয়ান। প্রকল্পের বিভিন্ন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা প্রতিনিয়ত কর্মকান্ড পরিদর্শনে ঈশ্বরদীতে আসছেন। এসব বিদেশীরা গ্রীণ সিটি, বাংলা কুটির ছাড়াও প্রায় ১৫-১৬টি স্থানে বাড়ি ভাড়া নিয়ে এবং দুটি আবাসিক হোটেলে বসবাস করছেন। প্রকল্পের দায়িত্বশীল সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এটমষ্ট্রয় এক্সপোর্ট সহ অন্যন্য প্রতিষ্ঠানকে আপাতত: বিদেশে যাতায়াত না করার জন্য বলা হয়েছে। প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর মুঠো ফোনে জানান, করোনা ভাইরাস নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সতর্কতামুলক কার্যক্রম করা হচ্ছে। এছাড়া প্রকল্পের মেডিকেল সেন্টারও করোনা মোকাবেলা করতে প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
ঈশ্বরদী ইপিজেড-এ চীন, জাপান, কোরিয়া, শ্রীলংকা, ভারত ও তুরস্কের প্রায় ১০০ নাগরিক কর্মরত রয়েছে। ইপিজেড এর আবাসনের বাইরেও কেউ কেউ বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস করছে। এসব বিদেশীদের মধ্যে চীনা নাগরিকের সংখ্যা প্রায় ৫০ জন। এব্যাপারে বেপজার জিএম (গণমাধ্যম) নাজমা বিনতে আলমগীর জানান, করোনা নিয়ে সরকারি বিধি বিধান মেনে চলা হচ্ছে। করোনার শুরু হতেই দেশে যাতায়াতের ব্যাপারে সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। যারা ছুটি কাটিয়ে ফিরে আসছে, তাদের বিমান বন্দরে প্রথমে স্ক্যানিং করা হচ্ছে। তারপরও এখানে আসার পর নিজ আবাসস্থলে ১৪দিন কোয়ারেন্টাইন হোমে রাখা হচ্ছে। এরপর মেডিকেল চেকআপ করিয়ে কাজে যোগ দিতে দেয়া হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি শিহাব রায়হান জানান, করোনা বিষয়ে আতংকিত হওয়ার কোন কারণ নেই। বাড়তি নিরাপত্তা ও সতর্কতা গ্রহন করেছে উপজেলা প্রশাসন। ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা আইসুলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে তিনি জানিযেছেন।