নাজিম হাসান,রাজশাহী থেকে:
রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে টেনে হিঁচড়ে পুকুরের পানিতে ফেলে দেয়ার মামলায় ছাত্রলীগ নেতাসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার দিবাগত রাতে পুঠিয়ার বেলপুকুর এবং সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও চন্দ্রিমা থানা পুলিশ এ অভিযান চালায়। আরএমপির মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস গতকাল মঙ্গলবার সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, গ্রেপ্তার পাঁচজন অধ্যক্ষের দায়ের করা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। এরা হলেন, নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চাঁচকোড় বাজারের বজলুর রহমানের ছেলে কামাল হোসেন সৌরভ (২৪), পাবনা সদর উপজেলার দাপুনিয়া গ্রামের রইচ শেখের ছেলে সাব্বির আহম্মেদ ওরফে শান্ত (২২), চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলা সদরের শামিমুল ইসলামের ছেলে সালমান টনি (২২), রাজশাহী মহানরগরীর ভদ্রা এলাকার সিরাজুল ইসলামের ছেলে রায়হানুল ইসলাম ওরফে হাসিব (২১) এবং জেলার চারঘাট উপজেলার ইউসুফপুর গ্রামের মাহাতাব আলীর ছেলে মুরাদ হোসেন (১৯)। এরা রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে সৌরভ মামলার এক নম্বর আসামি। এছাড়া মুরাদ দুই, শান্ত তিন, টনি ছয় এবং হাসিব সাত নম্বর আসামি। সাবাই ছাত্রলীগের নেতা ও কর্মী। এদের মধ্যে সৌরভ পলিটেকনিক ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। অধ্যক্ষকে পানিতে ফেলার ঘটনায় তাকে দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। মিডটার্মে ফেল এবং ক্লাসে অনুপস্থিত থাকা এই সৌরভকেই ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ দিতে গত ২ নভেম্বর সকালে অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিনের কার্যালয়ে গিয়ে চাপ দেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে অধ্যক্ষের সঙ্গে তাদের কথাকাটাকাটি হয়। এর জের ধরে ওইদিন দুপুরে অধ্যক্ষকে টেনেহিঁচড়ে ক্যাম্পাসের ভেতরের একটি পুকুরের পানিতে ফেলে দেয়া হয়। এ নিয়ে রাতে সাতজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৫০ জনকে আসামি করে ওই রাতে নগরীর চন্দ্রিমা থানায় মামলা করেন অধ্যক্ষ। এরপর পুলিশ ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করে। তবে মূলহোতারা ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। গত ১২ নভেম্বর অধ্যক্ষ ফরিদকে সহানুভূতি জানাতে গিয়ে এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা। অবশেষে মূলহোতা সৌরভসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করলো পুলিশ। এ নিয়ে মোট ১৮ জন গ্রেপ্তার হলেন। আরএমপি মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন,ঘটনার পর থেকেই মূলহোতারা আত্মগোপন করেছিলেন। বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়েও তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে প্রধান আসামিসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। এছাড়া এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।