নাজিম হাসান,রাজশাহী থেকে :
রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার বড়াল নদীর স্লুইচগেটের নিচ থেকে তিনটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার পর থেকে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা মরদেহগুলো উদ্ধার কাজ শুরু করে। এবং বেলা ৩টার দিকে উদ্ধার কাজ শেষ হয়। এ সময় পুলিশের ক্রাইম সিন ইউনিট (সিআইডি) ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সদস্যরা ঘটনাস্থলে যায়। তাদের উপস্থিতিতে সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। চারঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সমিত কুমার কু-ু বলেন,স্থানীয়দের মাধ্যমে মরদেহগুলো ভেসে আসার খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে যান। মরদেহগুলো কচুরিপানার মধ্যে ঢেকে ছিল। তার অংশ বিশেষ ওপর থেকে দেখে মনে হচ্ছিল চারটি মরদেহ রয়েছে। তবে উদ্ধার করতে গিয়ে দেখা গেছে তিনটি মরদেহ অন্যটি মহিষ। সেটিও পচে গেছে। গবাদি পশু হওয়ায় সেটি আর উদ্ধার করা হয়নি। অপর তিনটি মরদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও জানান, মরদেহগুলোর মধ্যে তিনটিই পুরুষের বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে পানিতে থেকে পচে যাওয়ায় ঠিকমতো চেনা যাচ্ছে না। মরদেহগুলো অন্তত ১০ দিন আগের হওয়ায় গলে গেছে। মরদেহগুলো ভারত থেকেও ভেসে আসতে পারে। তবে যাচাই-বাছাইয়ের আগে এই বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। রাজশাহী পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ জানান, চারঘাট স্লুইচগেটে মরদেহগুলো ভেসে এসেছে। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহগুলো উদ্ধার করে। মরদেহগুলো পুরোপুরি গলে যাওয়ায় পুলিশ বা স্থানীয়রা কেউেই তাদের পরিচয় সনাক্ত করতে পারেনি। তাদের মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করার জন্য মরদেহগুলোর ময়নাতদন্ত করা হবে। আর পরিচয় সনাক্তের জন্য তাদের ডিএনএ সংগ্রহ করা হবে। এছাড়া এ ঘটনায় যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য থানা পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান রাজশাহী পুলিশ সুপার। এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ বলেন, নিহতদের বয়স ১৮ থেকে ৩০/৩৫ এর মধ্যে। তাদের একজনের কোমর থেকে চাবি পাওয়া গেছে, একজনের দেহ থেকে সাদা লুঙ্গি পাওয়া গেছে আর একজনের বুকের ওপরে ক্ষতচিহ্ন পাওয়া গেছে। রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ আশপাশের জেলার বিভিন্ন এলাকার থানায় তারা খবর নিয়েছেন কিন্তু কোনো থানা থেকেই কারও নিখোঁজের খবর পাওয়া যায়নি। এর পরও তারা মরদেহ উদ্ধারের ঘটনাটি গভীরভাবে তদন্ত করে দেখছেন। পুলিশের পাশাপাশি সিআইডি এবং পিবিআই-ও কাজ করছে বলে জানান পুলিশ সুপার।