বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) বা সিআইডির তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট দায়ের করেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ।
রিটে বলা হয়, স্থানীয় পুলিশ এমন স্পর্শকাতর মামলার তদন্ত করতে অভিজ্ঞ নয়। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলাসহ বড় ধরনের মামলা সিআইডি তদন্ত করে। সিআইডির কাজ হলো তদন্ত করা। কিন্তু স্থানীয় পুলিশের কাজ আসামিদের গ্রেপ্তার করা। ফেনীর নুসরাত হত্যা মামলা পিবিআই তদন্ত করেছে। সুতরাং ন্যায়বিচারের স্বার্থে পিবিআই বা সিআইডির মাধ্যমে রিফাত হত্যা মামলারও তদন্ত করা হোক।
রিটে আরও বলা হয়, রিফাত হত্যা মামলায় তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি একমাত্র প্রত্যক্ষ সাক্ষী। অন্য কোনো প্রত্যক্ষ সাক্ষী নেই। অন্যদিকে মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। এ অবস্থায় প্রত্যক্ষ সাক্ষীকে আসামি বানালে প্রকৃত বিচার হবে না। সাক্ষীর জবানবন্দি ১৬৪ ধারায় নেওয়া যাবে, কিন্তু আসামি হিসেবে জবানবন্দি নেওয়া যাবে না। অথচ মিন্নিকে পাঁচ দিনের রিমান্ড দেওয়া হয় এবং তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়া হয়। তাই মিন্নির গ্রেপ্তার ও ১৬৪ ধারার জবানবন্দি অবৈধ হবে। রিটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় সচিব, আইন মন্ত্রণালয় সচিব, পুলিশের আইজি, বরিশালের ডিআইজি, বরগুনার পুলিশ সুপারসহ সাত জনকে বিবাদী করা হয়েছে।
২৬ জুন সকালে প্রকাশ্যে বরগুনা সরকারি কলেজের গেটের সামনে রিফাতকে কুপিয়ে আহত করেন নয়ন বন্ড ও তার সহযোগীরা। গুরুতর আহত অবস্থায় বরিশাল নেওয়ার পর তিনি মারা যান। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে বরগুনা থানায় হত্যা মামলা করেন।
রিফাত হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত মিন্নিসহ ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা সবাই ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। প্রধান আসামি নয়ন বন্ড ২ জুলাই পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। তবে মামলার এজাহারভুক্ত ১২ আসামির মধ্যে এখনও চারজন গ্রেপ্তার হয়নি। তারা হচ্ছেন মুসা, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রায়হান ও রিফাত হাওলাদার। আগামী ৩১ জুলাই মামলার চার্জ গঠনের তারিখ ধার্য রয়েছে।