পাবনার ভাঙ্গুড়ায় কলেজ থেকে ফেরার পথে মাইক্রোবাসযোগে অপহরণের ঘটনা নিজের সাজানো নাটক ছিল বলে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে কলেজছাত্র আব্দুল্লাহ। মানসিক হতাশা থেকেই গত বুধবার দুপুরে তিনি এই অপহরণের নাটক করেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হাসপাতাল ছাড়ার সময় পুলিশ ও অন্যান্যদের এমনই তথ্য দেয় ভাঙ্গুড়া সরকারি হাজী জামাল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের এই ছাত্র। তবে এর পেছনে বিশেষ কোনো চক্রের সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। আব্দুল্লাহ উপজেলার মন্ডুতোষ ইউনিয়নের বোয়ালমারী গ্রামের আওয়াল প্রামাণিকের ছেলে।
আব্দুল্লাহ জানায়, সে বেশ কিছুদিন ধরে মানসিক বিষণ্ণতায় ভুগছে। সম্প্রতি ছেলেধরা গুজবে সে প্রভাবিত হয়ে এই অপহরণের নাটক সাজায়। তবে এ ব্যাপারে তাকে কেউ কোনোভাবে উসকানি বা সহযোগিতা করেনি বলে সে দাবি করে। সে নিজেই উপজেলার মল্লিকচক গ্রামের সড়কে চলমান একটি যাত্রীশূন্য মাইক্রোবাসে উঠে চাটমোহর নতুন বাজার গিয়ে নামে। সেখান থেকে সে একটি সিএনজিযোগে ভাঙ্গুড়া বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছে ব্লেড দিয়ে নিজের শরীরের বিভিন্ন অংশে কেটে অপহরণকারীদের আঘাতে অসুস্থতার ভান করে। তখন স্থানীয়রা তাকে ভাঙ্গুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এরপর হাসপাতলে সে কয়েক ঘণ্টা অচেতন থাকার অভিনয় করে। কেন সে এটা করল এমন প্রশ্নে আব্দুল্লাহ তার মানসিক অসুস্থতার কথা জানায়।
আব্দুল্লাহ নিকটতম আত্মীয় ও উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সুমন বাবু জানায়, কিছুদিন আগে প্রেমে ব্যর্থ হয় আব্দুল্লাহ। এরপর থেকেই মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন হয়ে চলাফেরা করে সে। মূলত প্রেমিকের সহনুভূতি পেতেই এই নাটক করে আব্দুল্লাহ। তবে আব্দুল্লাহ প্রেমের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা জানান, প্রথম থেকেই এই অপহরণের ঘটনাটি সাজানো ও পূর্বপরিকল্পিত বলে পুলিশের ধারণা ছিল। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ওই কলেজছাত্রের দেওয়া তথ্যে সেটাই প্রমাণিত হলো।
এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর অপরাধে আব্দুল্লাহকে আইনের আওতায় আনা হবে কিনা জানতে চাইলে ওসি বলেন, বিষয়টি পুলিশ খতিয়ে দেখছে। কোনো চক্রের ইন্ধনে এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।