গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি। পানির ¯্রােতে ছিঁড়ে গেছে উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের মাদারী পাড়ায় তিস্তার বামতীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। হুমকির মুখে সুন্দরগঞ্জ-কামারজানি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। বন্যা শিবির গুলোতে দেখা দিয়েছে রান্না করা খাদ্য সংকট। গতকাল মঙ্গলবার সকাল হতে বন্যার পানি আরও বেড়ে গিয়ে বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে। এদিকে উজানের পানির ¯্রােতে তিস্তার বামতীরের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ছিঁড়ে গিয়ে নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। অপরদিকে ডানতীর বাঁধ বেলকা ইউনিয়নের ধুমাইটারি মাদ্রাসা সংলগ্ন এলাকায় হুমকির মুখে। যে কোন মহুত্বে ভেঙে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। ইতিমধ্যে বালির বস্তা ফেলা হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গড়ে বন্যা শিবিরে রান্না করা খাবার ও ওষধ সংকট দেখা দিয়েছে। তিস্তার চরাঞ্চলের বসতবাড়ির ঘরের চালে উঠে গেছে পানি। কোথাও ঠাই নেই চরবাসীর। বিভিন্ন চরাঞ্চল ঘুরে ফিরে দেখা গেছে, ঘরবাড়ি ছেড়ে গৃহপালিত পশুপাখি নিয়ে চরবাসী ছুঁটছে আশ্রয় কেন্দ্র, উঁচুস্থান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ এবং স্বজনদের বাড়িতে। উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, চন্ডিপুর, শ্রীপুর ও কপাসিয়া ইউনিয়নের সবগুলো ওয়ার্ড এখন পানির নিচে। পানিবন্ধি পরিবারগুলো মানবেতর জীবন যাপন করছে। বন্ধ হয়ে গেছে চরাঞ্চলের ২১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদান কার্যক্রম। ডুবে গেছে তরিতরকারিসহ সব ফসলের ক্ষেত। পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে ৬টি ইউনিয়নের কমপক্ষে ৩০ হাজার পরিবার। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পারিবারদের মাঝে এ পর্যন্ত ১০০ মেট্রিকটন চাল ও ১ হাজার কাটুন শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে হাজারও একক জমির মৌসুমি ফসল। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে চরাঞ্চলের যোগায়োগ ব্যবস্থা। ঘরবাড়ি ছেড়ে যাওয়া পরিবারগুলো নৌ-ডাকাতির শঙ্কায় রয়েছে। অনেক চরবাসী রাত জেগে ঘরের চালে দাঁড়িয়ে থেকে বাড়ি পাহাড়া দিচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সোলেমান আলী জানান, পানিবন্ধি পরিবারদের মাঝে শুকনো খাবার, ত্রাণ সামগ্রী ও গো-খাদ্য বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যে ১০০ মেট্রিকটন চাল বিতরণ করা হয়েছে। আরও ত্রাণ সামগ্রীর জন্য চাহিদা পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া মাত্রাই তা বিতরণ করা হবে।