ট্রাম্পের বিজয়ের পর উদ্বেগ ও ভয়ে মার্কিন কৃষ্ণাঙ্গরা

রাজসিক প্রত্যাবর্তনে দ্বিতীয়বারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর পর থেকেই আমেরিকাজুড়ে কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে।

এই ভোটারদের বেশিরভাগই কমলা হ্যারিসকে সমর্থন করেছিলেন। যদিও ট্রাম্প তার প্রচারণায় কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষদের সমর্থন বাড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন।

ইডিসন রিসার্চের এক্সিট পোলের তথ্যে দেখা গেছে, ট্রাম্পের প্রাপ্ত ভোটের মধ্যে কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের হার ছিল ২০২০ সালের মতোই। যদিও কিছু এলাকায় তার সমর্থন কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে।

নাগরিক অধিকার কমানোর আশঙ্কা

তবে অনেক কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকান উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে নাগরিক অধিকার কমে যেতে পারে। কারণ তিনি ফেডারেল বৈচিত্র্য ও অন্তর্ভুক্তি প্রোগ্রাম বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

এ বিষয়ে ম্যারি স্পেন্সার নামে উইসকনসিনের এক সাবেক কৃষ্ণাঙ্গ নার্স উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘ট্রাম্প আমাদের দিকে একপ্রকার তুচ্ছ দৃষ্টিতে তাকান, যা আসলে তার ভাবনাকে প্রতিফলিত করে’।

ট্রাম্পের বিজয়ে হতাশ হয়েছেন জর্জিয়ার উদ্যোক্তা ক্যাটরিনা হোমসও। এই কৃষ্ণাঙ্গ নারী কমলা হ্যারিসকে ভোট দিয়েছিলেন দেশকে ঐক্যবদ্ধ করার প্রত্যাশায়। তবে এখন তিনি মনে করেন, ‘একটি বিভাজনের মনোভাব ফিরে এসেছে’।

কৃষ্ণাঙ্গ সম্প্রদায়ের প্রত্যাশা ও রাজনৈতিক সংহতি

ট্রাম্পের বিজয়ে যদিও কৃষ্ণাঙ্গদের মাঝে হতাশা সৃষ্টি হয়েছে, তা সত্ত্বেও কিছু কৃষ্ণাঙ্গ সংগঠন এই ফলাফলের মাধ্যমে আরও কঠোরভাবে নাগরিক অধিকার আদায়ে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার সংকল্প প্রকাশ করেছে।

এরকমই একটি সংগঠন ‘উইন উইথ ব্ল্যাক উইমেন’। জোটাকা অ্যাডি নামে এই গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, ‘আমরা আমাদের অধিকারের জন্য সবকিছু করব এবং চুপ করে থাকব না’।

নির্বাচনী প্রচারণায় ট্রাম্প অবৈধ অভিবাসীরা ‘মার্কিন কৃষ্ণাঙ্গদের চাকরি ছিনিয়ে নিচ্ছে’ বলে দাবি করেন। যা মূলত কৃষ্ণাঙ্গদের কাজকর্ম সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি করেছে। এমনকি তিনি নির্বাচনী প্রচারণায় কমলা হ্যারিসের জাতিগত পরিচয় নিয়েও মিথ্যা দাবি করেছিলেন।

বিভাজন, অর্থনীতি ও চাকরির প্রত্যাশা

তবে কৃষ্ণাঙ্গ সম্প্রদায়ের মধ্যে কিছু অংশে ট্রাম্পের অর্থনৈতিক পরিকল্পনাগুলো বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। উদাহরণস্বরূপ- শেডরিক কার্টার নামে আটলান্টার একজন ব্যবসায়ী মনে করেন, ট্রাম্প দেশে চাকরি ও অর্থনীতির উন্নতি ঘটাবেন এবং এতে কৃষ্ণাঙ্গদের অবস্থান আরও শক্তিশালী হবে।

এছাড়াও কিছু কৃষ্ণাঙ্গ ভোটার ট্রাম্পের কড়া অভিবাসন নীতিকে সমর্থন জানিয়েছেন। তাদের মতে, এই নীতি কৃষ্ণাঙ্গদের চাকরি রক্ষায় সহায়ক।

ভয় ও উদ্বেগ

তথাপি সন্ড্রা ওয়াকার নামে নর্থ ক্যারোলিনার ৬৩ বছরের এক শিক্ষক ট্রাম্পের বিজয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বিশেষ করে কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানদের জন্য ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদকে ‘বিপজ্জনক’ বলে উল্লেখ করেছেন। সূত্র: রয়টার্স