‘কোকিলকণ্ঠী’ শব্দটির সঙ্গে যে নামটি জুড়ে আছে, তিনি বেবী নাজনীন। নব্বই পরবর্তী আধুনিক বাংলা গানের ভুবন যার স্বরগ্রামের সঙ্গে উঠতো, নামতো, নাজনীন তাদের অন্যতম। ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ চূড়ায় উঠে তিনি নাম লেখান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) রাজনীতিতে। কোনঠাসা হয়ে একপর্যায়ে পাড়ি জমান বিদেশে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে দীর্ঘ প্রবাস জীবন শেষে অবশেষে ঢাকা ফিরছেন বিনোদন জগতের ব্লাক ডায়মন্ডখ্যাত সংগীতশিল্পী ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বেবী নাজনীন।
শিল্পীর ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, আগামী রোববার (১০ নভেম্বর) সকাল ১০টায় কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবেন তিনি। বিগত ১৬ বছরের আওয়ামী লীগ শাসনামলে নিজের পেশাগত কাজকর্মে বারবার বিভিন্নভাবে বাধাগ্রস্ত হয় বেবী নাজনীনের সংগীতজীবন।
বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন কিংবা স্টেজ শো- কোনো মাধ্যমেই বেবী নাজনীন স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করতে পারেননি। একপর্যায়ে তিনি দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। তবে আন্তর্জাতিকভাবে প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছে বেবী নাজনীন সবসময়ই সমাদৃত ছিলেন এবং আছেন। ফলে বিদেশের মাটিতে তার কাজকর্মে কোনো বাধা আসেনি।
বরং এই সময়ে আমেরিকা, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন ব্লাক ডায়মন্ডখ্যাত সংগীতশিল্পী বেবী নাজনীন। সাড়ে চার দশকের ক্যারিয়ারে আধুনিক সংগীতের অর্ধশতাধিক একক অডিও অ্যালবামসহ অসংখ্য দ্বৈত অডিও অ্যালবামে গান গেয়েছেন এ গায়িকা। ভারতের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী আশা ভোঁশলে, বাপ্পি লাহিড়ী, কুমার শানু, কবিতা কৃষ্ণমূর্তির সঙ্গেও একাধিক অডিও অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে তার।
বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের বিশেষ শ্রেণির তালিকাভুক্ত সংগীতশিল্পী বেবী নাজনীন চলচ্চিত্র, অডিও মাধ্যমে অসংখ্য জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন।
‘মানুষ নিষ্পাপ পৃথিবীতে আসে’, ‘আমার একটা মানুষ আছে’, ‘ওই রঙধনু থেকে’, ‘পত্রমিতা’, ‘এলোমলো বাতাসে উড়িয়েছি শাড়ির আঁচল’, ‘কাল সারারাত ছিল স্বপনেরও রাত’, ‘দুচোখে ঘুম আসে না তোমাকে দেখার পর’, ‘আমার ঘুম ভাঙাইয়া গেলোরে মরার কোকিলে’, ‘লোকে বলে আমার ঘরে নাকি চাঁদ উঠেছে’, ‘আজ পাশা খেলবো রে শাম’, ‘প্রিয়তমা’, ‘সারা বাংলায় খুঁজি তোমারে’, ‘ও বন্ধু তুমি কই কই রে, এ প্রাণো বুঝি যায় রে’- এমন অসংখ্য গানের মাধ্যমে বাংলা গানের ভাণ্ডার সমৃদ্ধ করেছেন এই সংগীত তারকা।