ঈশ্বরদীতে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েই চলেছে

ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতা:
ঈশ্বরদীতে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ হঠাৎ করেই বাড়ছে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে অক্টোবরের ২৪ তারিখ পর্যন্ত ঈশ্বরদী উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪২ জন। বেসরকারি হাসপাতালেও ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর ভীড় দেখা গেছে। সেপ্টেম্বরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৭ জন এবং বেসরকারী ইমপিরিয়াল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অন্তত ২১ জন চিকিৎসা নিয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে পৌর এলাকার বাসিন্দা ছাড়াও ইউনিয়ন এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের শ্রমিক রয়েছে বলে জানা গেছে। ঘন ঘন বৃষ্টির কারণে জমে থাকা পানিতে এডিস মশার বিস্তার ঘটছে। তাছাড়া এডিস মশার লাভা নিধনে তেমন কোন উদ্যোগ না থাকায় ঈশ্বরদীতে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে বলে স্থানীয়রা অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিসংখ্যানবিদ নাজনীন আফরোজ জানান, ২৪ অক্টোবর হাসপাতালে তিনজনসহ অক্টোবরে ৪২ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এর বাইরেও বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্তরা চিকিৎসা গ্রহন করছেন। ঈশ্বরদীতে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিদিনই গড়ে ৩ থেকে ৫ জন ডেঙ্গু  আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল, কিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারেও আক্রান্তরা চিকিৎসা ও পরীক্ষা করতে ভীড় করছেন। জটিল রোগীদের পাবনা, রাজশাহী ও ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: মালেকুল আফতাব ভূইয়া বলেন, প্রতিদিনই হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী আসছে। রোগের ধরনও পাল্টাচ্ছে। শরীরে ব্যথা, জ্বর কিংবা অন্য কোনো উপসর্গ নিয়ে এলেই রক্তের ধারা (সিবিসি) পরীক্ষা করতে বলা হয়। শরীরে প্লাটিলেটের পরিমাণ ৪৫ হাজারের নিচে হলে পাবনা, রাজশাহী কিংবা ঢাকায় স্থানান্তর করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ের ঘন ঘন বৃষ্টিতে জমে থাকা পানিতে এডিশ মশা লাভা ছড়াচ্ছে। তবে এবারে মৃত্যুর কোন ঘটনা এখনও ঘটেনি জানিয়ে তিনি বলেন, সকলকে সচেতন থাকতে হবে। যেন কোথায়ও পানি জমে না থাকে, পাশাপাশি মশা নিধনও জরুরী ।

এবিষয়ে কর্মকারপাড়া-নূরমহল্লা এলাকার মামুনর রশীদ নান্টু বলেন, পৌরসভার পক্ষ হতে মশা বা লাভা নিধনে দৃশ্যমান কোন উদ্যোগ নেই। ফেসবুকে দেখেছি, ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। কিন্তু আমাদের এবং অনেক এলাকাতে এখনও ওষুধ ছিটানো হয়নি। যেকারণে মশার প্রকোপ চরমভাবে বেড়েছে।

পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবির কুমার দাস মশা নিধন প্রসংগে বলেন, পৌরসভার মাত্র ৪টি মেশিন দিয়ে পর্যায়ক্রমে ওষুধ ছিঁটানো হচ্ছে। বৃষ্টি হলে ছিটানো ওষুদ কোন কাজ করে না। তাই ৩-৪ দিন ধরে বৃষ্টি থাকায় বন্ধ রাখা হয়েছে। তাছাড়া পৌরসভার পক্ষ থেকে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার কার্যক্রমও অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।  ##