১৫ বছর পর নিজ গ্রামে বাবার জানায়ায় রবিউল

জসীমউদ্দীন ইতি ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের প্রায় ১৫ বছর ৮ মাস পর বাবার শেষ ইচ্ছা পূরণে প্যারোলে মুক্তি পেয়ে ঢাকার কাশিমপুর কারাগার থেকে বাসায় এসে বাবার জানাজায় অংশ নিলেন রবিউল আলম।

প্যারোলে মুক্তি পাওয়া ওই আসামি ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ভানোর ইউনিয়নের ভানোর নেংটিহারা গ্রামের আ. রহমানের ছেলে।

বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বাবার জানাজায় অংশ নেওয়ার পর আবার পুলিশের প্রিজনভ্যানে চলে গেছেন ঢাকার উদ্দেশে।

এর আগে গত বুধবার সকালে বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান রবিউল ইসলামের বাবা আব্দুর রহমান। এরপরে আইনজীবীর মাধ্যমে প্যারোলে মুক্তির জন্য আদালতে আবেদন করেন রবিউলের ভাই শাহাজাহান আলী। সে আবেদন আদালত মঞ্জুরের পর কাশিমপুর কারা কর্তৃপক্ষ পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে প্রিজনভ্যানে করে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যান রবিউলকে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বিকেল সাড়ে ৫টার পর নেংটিহারা গ্রামে প্রিজন ভ্যানে পৌঁছান রবিউল। দীর্ঘদিন পর রবিউরের গ্রামে ফেরার খবরে বাড়িতে ভিড় জমান তার বাবার জানাজায় অংশ নেওয়া মানুষসহ আশপাশের গ্রামের লোকজন। বাড়িতে ফিরে মা, ভাইবোন ও আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে বাড়ির ছাদে ওঠেন রবিউল। হাত নাড়িয়ে সবার কাছে বাবার জন্য দোয়া চান তিনি।

পরে সন্ধ্যা ৭টায় ভানোর এনএইচ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বাবার জানাজার পূর্ব মুহূর্তে রবিউল সবার উদ্দেশ্যে বলেন, আমার শেষ ইচ্ছে ছিল বাবাকে এক পলক দেখবো, বাবার মৃত্যু হলে জানাজায় অংশ নিয়ে নিজ হাতে দাফন করবো। সেই ইচ্ছে পূরণ করেছেন আদালত। সবাই বাবা এবং আমার জন্য দোয়া করবেন।

রবিউলের চাচা খলিলুর রহমান জানান, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মাত্র ৭ সপ্তাহ আগে বিডিআর সদর দপ্তরে চাকরিতে যোগ দেন রবিউল ইসলাম। এরপরেই ঘটে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনা। সেই ঘটনায় রবিউলের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। পরে সাজাভোগ করে মুক্তির কথা থাকলেও পুনরায় তাকে বিস্ফোরক আইনের আরেকটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে বন্দি রাখা হয়েছে।

প্যারোলে মুক্তি দিয়ে বাবার জানাজায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়ার কারণে আদালতকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন রবিউলের মা সালেহা বেগম ও তার ভাই সাহাজাহান আলী।

বালিয়াডাঙ্গী থানার ওসি জাকারিয়া মন্ডল জানান, হাজতি আসামি বাবার জানাজায় অংশ নিতে প্যারোলে মুক্তিতে এসেছিল। রবিউলের বাড়িতে পৌঁছানোর এবং বাড়ি থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া পর্যন্ত আমাদের বালিয়াডাঙ্গী থানার একজন এসআই ও কয়েকজন কনস্টেবল সঙ্গে থেকে সহায়তা করেছে