সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানিমূলক মন্তব্য পোস্টের অভিযোগে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। এ ঘটনায় দেশটির কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (এফআইএ) একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। চার সদস্যের এই কমিটির নেতৃত্বে আছেন সংস্থাটির সাইবার ক্রাইম উইংয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
সূত্রের বরাতে এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে ইমরান খানের এক পোস্টকে কেন্দ্র করে এ তদন্ত শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার অভিযোগ, পোস্টে ইমরান দেশটির ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা ও সরকারি প্রতিষ্ঠান নিয়ে উসকানিমূলক মন্তব্য করেছেন। পাশাপাশি ইমরানের পোস্টের মাধ্যমে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি ও দেশজুড়ে অরাজকতা সৃষ্টির আহ্বান জানানো হয়েছে।
তদন্ত শুরুর পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চার সদস্যদের ওই কমিটির সদস্যরা শুক্রবার রাওয়ালপিন্ডিতে আদিয়ালা কারাগারে গিয়েছিলেন। কিন্তু আইনজীবীদের ছাড়া তদন্ত কমিটির সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে রাজি হননি পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান। পরে ইমরান খানকে জিজ্ঞাসাবাদ না করেই তদন্ত কমিটির সদস্যরা কারাগার থেকে ফিরে যান।
নিজের ভেরিফায়েড এক্স অ্যাকাউন্টে ইমরান খান লিখেছিলেন, ক্ষমতা ধরে রাখতে পুরো দেশের মানুষকে বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়ার ঘটনা পাকিস্তানে এটাই প্রথম নয়। বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের তুলনা টানেন ইমরান খান। তিনি লিখেছেন, ‘১৯৭০ সালের নির্বাচনে জিতলেও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও দলটির নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছিল।’
একই পোস্টে ইমরান খান অভিযোগ করেন, আরও একবার পাকিস্তান ক্ষমতাধর অভিজাত কিছু মানুষের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। এই অভিজাতেরাই সব ক্ষেত্রে প্রভাব খাটাচ্ছে। দেশের সব সম্পদ এখন তাদের দখলে। ইমরান লিখেছেন, ‘নীতিহীন এই মাফিয়া নিজেকে সংবিধান ও আইনের ঊর্ধ্বে মনে করছে। ক্ষমতাধর এই অল্প কিছু মানুষ দেশের মানুষজনকে দাস বানিয়ে রেখেছে।’
ইমরান খান একই পোস্টে দেশটির বিচার বিভাগ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তিনি অভিযোগ করেন, সংবিধান লঙ্ঘন করে যারা ভোটে কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে, তাদের রক্ষা করছেন প্রধান বিচারপতিসহ পুরো বিচার বিভাগ। এ ছাড়া তিনি দেশটির বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন জোটের নেতাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ আনেন।
২০২২ সালের ৯ এপ্রিল পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে অনাস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রীর পদ হারান ইমরান খান। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা হয়েছে। ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট তাঁকে লাহোর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর এক বছরের বেশি সময় ধরে কারাগারে আছেন ইমরান খান। একাধিক মামলায় তাঁর সাজাও হয়েছে।