দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরজ। শরিয়ত নির্ধারিত সময়ে এসব নামাজ আদায় করতে হয়। ফজর, জোহর, আসর, মাগরিব ও এশা—প্রতি ওয়াক্তের নামাজের জন্য রয়েছে আলাদা সময়সীমা, যা আমরা নামাজের স্থায়ী ক্যালেন্ডারের মাধ্যমে জানতে পারি। তবে এই নির্দিষ্ট সময়ের শুরুতে, মাঝামাঝি নাকি শেষে নামাজ আদায় করা উত্তম—শরিয়তে এ বিষয়ে বিস্তারিত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এখানে তা সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো—
ফজর: সুবহে সাদিকের পর পূর্ব দিগন্ত ফরসা হয়ে ওঠার পরেই ফজরের নামাজ আদায় করা উত্তম। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘ফজর ফরসা হওয়ার পর আদায় করো। কারণ এতে বেশি সওয়াব রয়েছে।’ ইমাম শাফেয়ি (রহ.) বলেছেন, ‘প্রতি ওয়াক্তের নামাজ সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আদায় করাই উত্তম।’ তবে ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর মতে, ফজরের নামাজ শেষ সময়ে পড়াই উত্তম। এতে জামাতে লোক বেশি হওয়ার সময়-সুযোগ তৈরি হয়।
জোহর: জোহরের নামাজ গ্রীষ্মকালে ক্যালেন্ডারের উল্লেখিত ওয়াক্তের শেষ দিকে এবং শীতকালে সময়ের শুরুতে আদায় করাই উত্তম। আনাস (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) শীতকালে জোহরের নামাজ ওয়াক্ত হওয়ার পরপরই আদায় করে নিতেন এবং গ্রীষ্মকালে সূর্যের তাপ কমে এলে আদায় করতেন।
আসর: শীত-গ্রীষ্ম উভয় মৌসুমেই সূর্য ম্লান (হলুদ) হওয়ার আগে পর্যন্ত আসরের নামাজে দেরি করা উত্তম। যেহেতু আসরের পর নফল নামাজ আদায় করা মাকরুহ, তাই দেরি করে ফরজ নামাজ আদায় করলে নামাজের আগে বেশি বেশি নফল নামাজ আদায়ের সুযোগ মেলে। সূর্য ম্লান হওয়ার অর্থ সূর্যের এমন অবস্থা হওয়া, যখন তাকালে চোখ ধাঁধায় না। সূর্য হলুদ হয়ে যাওয়ার পর আসরের নামাজ আদায় করা মাকরুহ।
মাগরিব: মাগরিবের নামাজ সময় হওয়ার পরপরই আদায় করা উত্তম। মহানবী (সা.) বলেন, ‘আমার উম্মত যত দিন মাগরিবের নামাজ তাড়াতাড়ি এবং এশার নামাজ দেরিতে আদায় করবে, তত দিন তারা কল্যাণের পথে থাকবে।’
এশা: এশার নামাজ রাতের তিন ভাগের প্রথম ভাগ শেষ হওয়া পর্যন্ত দেরি করা উত্তম। মহানবী (সা.) বলেন, ‘যদি আমার উম্মতের জন্য কষ্ট হবে মনে না করতাম, তাহলে অবশ্যই এশার নামাজ রাতের তৃতীয়াংশ পর্যন্ত দেরি করতাম।’ এ ছাড়া এশার নামাজের পর যেহেতু হাদিসে অহেতুক কথাবার্তা না বলার নির্দেশ রয়েছে, তাই একটু দেরিতে আদায় করলে নামাজ শেষে ঘুমানোর জন্য বিছানায় যাওয়া যায়।