পাবনা প্রতিনিধি : মাদক কেনাবেচা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে পাবনা বাস টার্মিনালে মিলন হোসেন মধু আর মঞ্জু আলীকে কুপিয়ে হত্যা করেন মাদক বিক্রেতা সম্রাট শেখ। পরে পাবনা থেকে পালিয়ে অন্য জেলায় আত্মগোপন করেন তিনি। তবে পালিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি তার। ধরা পড়েছেন পুলিশের জালে। হত্যাকান্ডে নিজেকে জড়িত থাকার বিষয়টি আদালতে স্বীকারও করেছেন সম্রাট শেখ। পাবনার চাঞ্চল্যকর ডাবল হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন ও জড়িত আসামিকে গ্রেপ্তার করে এ তথ্য জানিয়েছে পুলিশ।
রোববার (০৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানান পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম।
গ্রেপ্তারকৃত সম্রাট শেখ (৪০) পাবনা সদর উপজেলার কবিরপুর গ্রামের মৃত মিরাজ শেখের ছেলে। আর নিহত মিলন হোসেন মধু (৪৫) পাবনা পৌর সদরের পূর্ব শালগাড়ীয়া মহল্লার মৃত আরমান প্রামানিকের ছেলে এবং মঞ্জু আলী (৪০) দক্ষিণ রাঘবপুর মহল্লার মৃত নুর আলীর ছেলে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম জানান, ঘটনার পর পটুয়াখালী জেলায় পালিয়ে আত্মগোপন করে সম্রাট শেখ। জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও পাবনা সদর থানা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গত ৫ সেপ্টেম্বর ভোরে পটুয়াখালী সদর উপজেলার বোতলবুনিয়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। উদ্ধার করা হয় হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাকু।
প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকান্ডে জড়িত আসামী সম্রাট এলাকার একজন কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে ৭টি মাদক মামলা রয়েছে। মূলত মাদক ক্রয় বিক্রয়কে কেন্দ্র করে এই ডাবল মার্ডার সংঘঠিত হয়েছে। আসামী সম্রাট শনিবার (০৭ সেপ্টেম্বর) বিজ্ঞ আদালতে হত্যাকান্ডে দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। রোববার দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহজতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।
উল্লেখ্য, ভুক্তভোগী মধু এবং মঞ্জু মাদক সেবন করতেন৷ কিছুদিন আগে মাদক বিক্রেতা সম্রাটের কাছে মাদক কিনতে গিয়েছিলেন মধু আর মঞ্জু। কিন্তু অভিযুক্ত সম্রাট তাদের কাছে মাদক বিক্রি করতে অস্বীকৃতি জানায়। এই বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটকাটি এবং মারামারি হয়।এরপর গত ৪ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে সাতটার দিকে আসামী সম্রাট বাস টার্মিনাল পৌর মার্কেটের হালিমের হোটেলে নাস্তা করতে যান। এসময় পাশেই আন্ত:জেলা বাস কাউন্টারের কলার এর কাজ করতে থাকা (যাত্রী ডেকে বাসে তোলার কাজ ) ভিকটিম মঞ্জু এবং মধু আসামী সম্রাট কে দেখে হালিমের হোটেলের গলিতে গিয়ে সম্রাটের সাথে কথা কাটাকাটি এবং হাতাহাতি হয়। হাতাহাতির একপর্যায়ে আসামী সম্রাট উত্তেজিত হয়ে হালিমের হোটেলের পরোটা তৈরির টেবিলে থাকা চাকু নিয়ে প্রথমে মধুর পেটে ছুরিকাঘাত করেন। এসময় অপরজন মঞ্জু এগিয়ে গেলে তাকেও ছুরিকাঘাত করে সম্রাট। স্থানীয়রা তাদের দুজনকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।