হাঙ্গেরীর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য রসাটমের ‘কোর ক্যাচার’


ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতাঃ
রুশ রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি সংস্থা রসাটম সম্প্রতি হাঙ্গেরীতে নির্মানাধীন পাকস-২ এনপিপি’র একটি ইউনিটের জন্য কোর ক্যাচার সরবরাহ করেছে। পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্বয়ংক্রিয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ এই কোর ক্যাচার। পাকস-২ একটি আন্তর্জাতিক প্রকল্প, যা বাস্তবায়নে রুশ ও হাঙ্গেরীয়সহ অন্যান্য দেশের প্রতিষ্ঠানসমূহও কাজ করছে। রসাটমের গণমাধ্যম শনিবার (৩ আগস্ট) প্রেরীত এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে হাঙ্গেরিতে কোর ক্যাচার সরবরাহের কথা জানিয়েছে।

রাশিয়ার ভলগাদন্সক থেকে নৌপথে ৪৮দিনে পরিবহণ জাহাজটি কোর ক্যাচারের বিভিন্ন অংশ নিয়ে ৩,২০০কিমি অতিক্রম করে, গত ১ আগস্ট পাকস-২ এনপিপি সাইটে পৌছে।

এএসই ভাইস-প্রেসিডেন্ট এবং পাকস এনপিপি নির্মান প্রকল্পের পরিচালক ভিতালি পোলিয়ানিন বলেন, “এটা প্রতীকী যে পারমাণবিক বিদ্যুৎ ইউনিটের স্বয়ংক্রিয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ আগেভাগেই পাকস-২ এনপিপি সাইটে এসে পৌছেছে। সঙ্গতভাবেই বলা যেতে পারে যে, বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালু হবার পূর্বেই এটির নিরাপত্তা ও নির্ভরযোগ্যতা বিষয়গুলো প্রাধান্য পেয়েছে। আমরা সর্বতভাবেই চেষ্টা করছি যাতে ২০২৪ এর শেষ বা ২০২৫ এর শুরুতেই বিদ্যুৎ ইউনিটিটির নির্মান কাজ শুরু করা যায় এবং কোর ক্যাচার স্থাপনের কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হয়”।

পাকস এনপিপি’র পঞ্চম ইউনিটের প্রস্তুতি পর্বের কাজ নির্ধারিত সময় অনুযায়ী এগিয়ে চলছে এবং ফাউন্ডেশন স্লাবসহ অন্যান্য বৃহৎ নির্মান কাজ শুরুর জন্য প্রয়োজনীয় কাজের অনেক খানিই ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।

পাকস-২ প্রকল্পের প্রেসিডেন্ট ও মহাপরিচালক সের্গেই জ্যাকলি বলেন, “জেনারেল কন্ট্রাকটরের সঙ্গে আমাদের যৌথ লক্ষ্য হলো সম্ভাব্য সবচেয়ে কম সময়ে প্রকল্পটির কাজ সম্পন্ন করা। গত বছর আমরা বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পন্ন করতে সমর্থ হয়েছি এবং বর্তমানে কাজের গতি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। এসময় প্রকল্পে ৯০০ বিশেষজ্ঞ কাজ করছেন”।

পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের রিয়্যাক্টরের একদম নিচেই স্থাপিত হয় কোর ক্যাচার। কোর ক্যাচারটি তথাকথিত ‘স্যাকরিফিশিয়াল’ উপাদান দ্বারা পূর্ণ থাকে। সর্বাধিক জরুরী অবস্থায় (যার সম্ভাবনা নাই বললেই চলে) রিয়্যাক্টর কোরের মেল্ট ডাউন ঘটলে তা এই কোর ক্যাচারে এসে জমা হবে এবং পার্শ্ববর্তী পরিবেশে তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়া রোধ করবে।

২০১৪ সালে সম্পাদিত রাশিয়া-হাঙ্গেরী আন্তঃসরকারী চুক্তি এবং অন্য তিনটি মৌলিক চুক্তির অধীনে পাকস-২ পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে দু’টি ইউনিট থাকবে যার প্রতিটিতে স্থাপিত হবে ৩+ প্রজন্মের রুশ ভিভিইআর-১২০০ রিয়্যাক্টর। এসকল রুশ রিয়্যাক্টর সকল ইউরোপীয় ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা চাহিদা পূরনে সক্ষম। উল্লেখ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নে পাকস-২ ই হচ্ছে একমাত্র রুশ পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প। প্রতিটি বিদ্যুৎ ইউনিটের জীবন চক্রের দৈর্ঘ্য হবে ৬০ বছর।

বর্তমানে হাঙ্গেরীতে ভিভিইআর-৪৪০ রিয়্যাক্টর ভিত্তিক ৪টি বিদ্যুৎ ইউনিট চালু রয়েছে যা দেশের বিদ্যুৎ চাহিদার অর্ধেকের বেশি পূরণ করে।