সুন্দরগঞ্জে মডেল মসজিদের জায়গায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

// হযরত বেল্লাল, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধিঃ

 গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা মডেল মসজিদের নামে অধিগ্রহনকৃত এবং নামজারি করা জমির অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। বুধবার উপজেলা সহকারি কমিশনার ভুমি ও নিবার্হী ম্যাজিষ্ট্রেট মো. মাসুদুর রহমান অবৈধ স্থাপনা সমুহ উচ্ছেদ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন গণপূর্ত অধিদপ্তরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী এস এম রফিকুল ইসলাম, গাইবান্ধা ইসলামী ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক মো. মিরাজুল ইসলাম ও পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত মিলন কুমার চ্যাটার্জী প্রমূখ। দীর্ঘদিন হতে মালিকগণ অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে না নেয়ায় জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট ও জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। 

      ২০২০ সালে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পূর্ব বাইপাস মোড়ে মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজ শুরু করেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান উত্তরা ঢাকার মুক্তা কনস্ট্রাকশন এন্ড কনভয় সার্ভিস লিমিটেড। এরপর জানতে পারেন মসজিদের নামে অধিগ্রহনকৃত জমির কাগজপত্র এবং টাকা লেনদেন নিয়ে জটিলতা রয়েছে। সে কারণে দীর্ঘ চার বছর ধরে ঝুলে যায় মসজিদের নির্মাণ কাজ জানালেন, ঠিকাদার মাহমুদুন নবী মুরাদ।  

         পৌরসভার পূর্ব বাইপাস মোড়ে স্থানীয়দের অর্থায়নে নির্মিত বাইপাস মোড় জামে মসজিদটি ভেঙে সেই স্থানে উপজেলা মড়েল মসজিদ নির্মাণের জায়গা নির্ধারণ করেন কর্তৃপক্ষ জানান স্থানীয় মো. হাফিজার রহমান। তিনি বলেন, স্থানীয় মসজিদের সাড়ে পাঁচ শতক জমি মডেল মসজিদের নামে দান করে দেয়া হয়। এরপর কর্তৃপক্ষ আরও সাড়ে ৪৮ শতক জমি অধিগ্রহন করেন। অধিগ্রহনকৃত জমির মালিকগণ তাদের স্থাপনা দীর্ঘদিন হতে না সরানোর কারণে নির্মাণ কাজ বাধার মুখে পড়ে। অশেষে দীর্ঘদিন পর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। 

          অধিগ্রহনকৃত জমির মালিক মো. মোস্তাফিজুর রহমান, মো. চান্দ মিয়া, মো. লাল মিয়া জানান, জমি অধিগ্রহনের বিষয়ে আদালতে মামলা রয়েছে। এখনও মামলা নিস্পত্তি হয়নি। সে কারণে স্থাপনা সরানো হয়নি। বিধি বহিভূতভাবে অধিগ্রহকৃত জমির বসতবাড়ি ও দোকান ঘর উচ্ছেদ করে যদি সরকার মসজিদ নির্মাণ করে তাহলে তো করার কিছু নাই। জমির জটিলতা নিরসন না করে মডেল মসজিদের নামে নামজারি করা বেআইনি। 

         সুন্দরগঞ্জ উপজেলা সহকারি কমিশনার ভুমি মো. মাসুদুর রহমান জানান, উপজেলা মডেল মসজিদের নামে সাড়ে ৪৮ শতক জমি নামজারি হয়েছে। অধিগ্রহনের টাকা নেয়ার পর কয়েক দফা তাদের স্থাপনা সরানোর জন্য তাগাদা দেয়া হয়েছিল। না সরানোর কারণে উচ্ছেদ করা হয়। 

          গাইবান্ধা জেলার ভুমি অধিগ্রহন শাখার সিনিয়র সহকারি কমিশনার মো. জাহিদ বিন কাশেম জানান, তাদের নামের জমির মালিকানার কাগজপত্র সঠিক আছে কিনা তা না জেনে কিছু বলা যাবে না। তারা কাগজপত্র নিয়ে এলে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

          ২০১৯ সালের ২ সেপ্টেম্বর টেন্ডারের মাধ্যমে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মুক্তা কনস্ট্রাকশন এন্ড কনভয় সার্ভিস লিমিটেড মসজিদ নির্মাণ কাজ শুরু করেন ২০২০ সালে জানান গাইবান্ধা ইসলামী ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক মো. মিরাজুল ইসলাম। তার ভাষ্য মোট ৫৪ শতক জমির মধ্যে তিনতলা বিশিষ্ট মডেল মসজিদ নির্মাণ হবে। এতে ব্যয় হবে প্রায় ১৩ কোটি টাকা। কিন্তু জমি সংক্রান্ত জটিলতার কারণে দীর্ঘদিন হতে কাজ বন্ধ রয়েছে। নির্মাণ সামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ায় পূর্বের বরাদ্দের মাধ্যমে বর্তমানে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। সে কারণে পুনরায় টেন্ডার হয়েছে। 

        গাইবান্ধা জেলা গণপূর্ত অধিদপ্তরের নিবার্হী প্রকৌশলী এস এম রফিকুল ইসলাম জানান, সুন্দরগঞ্জ উপজেলা মডেল মসজিদ নির্মাণের জন্য পুনরায় টেন্ডার হয়েছে। এতে ব্যয় নির্ধারন করা হয়েছে ১৬ কোটি ৩৫ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। গত ২২/০৪/২০২৪ তারিখে ঘঙঅ (কার্যাদেশ) প্রদান করা হয়েছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে। 

         উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, মডেল মসজিদের জন্য নির্ধারিত জায়গাটি অধিগ্রহন করা হয়েছে। অধিগ্রহণ করা জমির ক্ষতিপূরণের টাকা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এলও শাখা থেকে প্রদান করা হয়। সরকারি গেটেজ অনুযায়ী জমি মালিক ইসলামি ফাউন্ডেশন। তাই মসজিদ নির্মানে কোন বাধা নেই।