নাটোর প্রতিনিধি
নাটোরের ঐতিহ্যবাহী নববিধান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিমান গোবিন্দের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দূর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন একই বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক-কর্মচারী। বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের একটি রেস্তোরায় এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌস। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, শুধুমাত্র তার নামটি সংশোধিতভাবে এমপিও ভুক্তির জন্য না পাঠানোর কারণে দীর্ঘ ৯ বছর নববিধান উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করার পরেও তার নাম এমপিও ভুক্ত হয়নি, ফলে বেতনও পাননি। তার নিয়োগ যে বৈধ ছিল তার স্বপক্ষে তিনি প্রধান শিক্ষক কতৃক স্বাক্ষরিত নিয়োগপত্র ও তার যোগদানের রিসিভ কপিও তার লিখিত আবেদনের সাথে সংযুক্ত করেন। এমপিও ভুক্তির জন্য বিভিন্ন সময়ে প্রধান শিক্ষকের চাহিদা অনুসারে ১৩ লাখ টাকা প্রদান করেন তিনি, তার একটি স্বীকারোক্তিপত্রও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপন করেন। তিনি এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন। পরে আরেক ভুক্তভোগি শিক্ষক হাছিনা ইয়াসমিন বলেন, কম্পিউটার শিক্ষক হিসেবে এমপিওভুক্তির পর ৪/৫ মাস বেতন উত্তোলন করার পরেও কিভাবে তার সার্টিফিকেট জাল বলে এমপিও ভুক্তি বাতিল করা হলো? তা তার অজানা। এছাড়া একই বিদ্যালয়ের শিক্ষক উমা রাণী পালিত, হাছিনা আক্তার ও অবসরপ্রাপ্ত নৈশ প্রহরী নূরুল ইসলাম সহ শিক্ষক কর্মচারীবৃন্দ নববিধান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় জাতীয়করণ করার নামে উত্তোলনকৃত টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনেন প্রধান শিক্ষক বিমান গোবিন্দ সরকারের বিরুদ্ধে। তারা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, প্রধান শিক্ষক বিমান গোবিন্দ সরকারের কথা ছিল যদি জাতীয়করণ না হয় তাহলে তিনি তাদের কাছ থেকে উত্তোলনকৃত টাকা ফেরৎ দেবেন। কিন্তু জাতীয়করণ না হওয়ায় তাদের টাকা ফেরৎ চাইতে গেলে তাদের সাথে খারাপ আচরণ করেন। পরে এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল ও পৌর মেয়র উমা চৌধুরী জলির নিকট তারা বিষয়টি জানালে সংসদ সদস্য বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শফিউল আযম স্বপনকে বলেন, যে প্রধান শিক্ষক যেন তিন দিনের মধ্যে উত্তোলনকৃত টাকা ফেরৎ দেন। এর পরে প্রধান শিক্ষক টাকা ফেরৎ না দিয়ে বিভিন্ন অপতৎপরতা চালান। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক বিমান গোবিন্দ সরকার জানান, জাতীয়করণের নামে যে টাকা নেওয়ার হয়েছে তা’ সকল শিক্ষক কর্মচারি একমত হয়েই কয়েক ধাপে টাকা তুলে ব্যাংকে জমা ও প্রেরণ করা হয় যার সকল তথ্যাদি সংরক্ষিত রয়েছে। অভিযোগকারীদের কথামত অনৈতিক কাজ না করায় তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করছেন। সংবাদ সম্মেলনে আনিত সকল সকল অভিযোগ মিথ্যা, মনগড়া এবং ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করেন তিনি।