// নাটোর প্রতিনিধি. নাটোরের গুরুদাসপুরে শেষ সম্বল ভিটে মাটি লিখে নেওয়ার পর, ভরণ পোষণ না দেয়ার অভিযোগ এনে, ছেলে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (এমবিবিএস) ডা.মোঃ সুজাউদ্দৌলা’র বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন ‘মা’ মোছাঃ মনিরা বেগম। গত (৬ মে) সকালে ইউএনও’র নারী সহায়তা কেন্দ্রে ওই অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ সূত্র ও মা মনিরা বেগম জানান,‘উপজেলা পৌর সদরের আনন্দ নগর মহল্লা’র মোঃ খাইরুল ইসলামের স্ত্রী তিনি। তাদের সন্তান ডা.মোঃ সুজাউদ্দৌলাকে লেখাপড়া করানোর জন্য স্বামী-স্ত্রী দুইজন কঠোর পরিশ্রম করেছেন। ছেলেকে ডাক্তারি পড়াশোনা করাতে গিয়ে নিজের সকল জায়গা জমি বিক্রি করে দিয়েছিলেন। তার স্বামী অসুস্থ্য শরীর নিয়েও অটোভ্যান চালিয়ে সংসার পরিচালনা করেছেন এবং ছেলের লেখাপড়ার খরচ দিয়েছেন। ছেলে এখন বড় ডাক্তার। অনেক টাকা উপার্জন করে। সর্বশেষ শেষ সম্বল বাড়ীর ভিটাও লিখে নেয় তাদের স্বামী-স্ত্রীর কাছ থেকে। জমি-জমা ভিটে মাটি শেষ হলেও ভেবেছিলেন ছেলেকে তো প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ছেলেই তাদের ভরণ পোষণ দিবে। তবে ভাগ্যের নির্মমতায় ছেলের কাছে ভরণপোষণ চাইতে গেলে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করে, এমনকি শারিরিক ও মানষিক নির্যাতনও চালায়। তাছাড়াও বাড়ি থেকে বেড় করে দেওয়ারও হুমকি দেয়। বাধ্য হয়ে শেষ সম্বল বাড়ীর ভিটা ও ভরণপোষণের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে অভিযোগ দিয়েছেন তারা।’
বাবা মোঃ খাইরুল ইসলাম বলেন,‘ তিনি একজন অসুুস্থ্য ব্যক্তি। অসুস্থ্য শরীর নিয়েও ভ্যানগাড়ী চালিয়ে কোন রকমে জীবন জীবিকা নির্বাহ করছেন। প্রতিদিন ঔষধ কিনতে হয়। স্ত্রী সংসার নিয়ে বিপাকেই পড়েছেন তিনি। যে ছেলের জন্য এত কিছু করেছেন,সেই ছেলেও ভরণপোষণ দিচ্ছেনা। এখন মানবেতর জীবন যাপন করছেন তারা।’
বাবা-মাকে ভরণপোষণ না দেওয়ার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (এমবিবিএস) ডাঃ মোঃ সুজাউদ্দৌলা মুঠোফনে বলেন, ‘পিতা-মাতা হওয়ার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছেন তারা। তার পিতা খাইরুল ইসলাম স্বেচ্ছায় তাকে জমি লিখে দিয়েছিলেন। এছাড়াও জমি-জমা বিক্রি করে এবং কঠোর পরিশ্রম করে তাকে পড়াশোনা করিয়েছেন তার বাবা-মা এমন ঘটনাও সত্য নয়। উপরন্ত বাবা-মাকে ভরণপোষণ দিতে চাইলেও তারা তার সাথে থাকতে চাননা।’
উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মুজাহিদুল ইসলাম বলেন,‘এটা পারিবারিক বিষয়। অল্প সময়ের মধ্যেই আশা করি সমাধান হয়ে যাবে।’
অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা আক্তার জানান,‘উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মুজাহিদুল ইসলামের সাথে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। সংশ্লিষ্ঠ্য সকলকে নিয়ে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’#