মুমিনগণ পরস্পর ভাই ভাই। (সুরা হুজুরাত: ১০)। তারা একে অপরকে আল্লাহর জন্য ভালোবাসবে—এটা ইমানের দাবি। আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য মুসলমানদের পারস্পরিক ভালোবাসার অনেক ফজিলত রয়েছে। এখানে সাত ফজিলতের কথা তুলে ধরা হলো—
ইমানের স্বাদ পাওয়া যায়: আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যার মধ্যে তিনটি গুণ বিদ্যমান, সে ইমানের স্বাদ পাবে। এক. যে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে। দুই. যে একমাত্র আল্লাহর জন্যই কাউকে ভালোবাসে। তিন. আল্লাহ যাকে কুফরি থেকে মুক্তি দিয়েছেন, সে কুফরিতে ফিরে যাওয়াকে তেমন অপছন্দ করে, যেমন আগুনে নিক্ষেপ হওয়াকে অপছন্দ করে।’ (বুখারি: ৫৮২৭; মুসলিম: ৯৪)
আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ: কোনো মুসলমানকে ভালোবাসার কারণে তার সঙ্গে দেখা-সাক্ষাতের ফলে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা যায়। রাসুল (সা.) বলেন, ‘এক ব্যক্তি তার কোনো (মুসলমান) ভাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য অন্য গ্রামে রওনা হয়, পথে আল্লাহ তার জন্য একজন ফেরেশতা বসিয়ে দেন। এরপর তিনি এ কথা পর্যন্ত হাদিসে বর্ণনা করেন যে, (ফেরেশতা তাকে বলেন) নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাকে এরূপ ভালোবাসেন, যেরূপ তুমি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে অমুক ব্যক্তিকে ভালোবাসো।’ (মুসলিম: ২৫৬৭)
ইমানের পূর্ণতা লাভ: আবু ইমামাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য কাউকে ভালোবাসে, আর আল্লাহর জন্য কারও সঙ্গে বিদ্বেষ পোষণ করে এবং আল্লাহর জন্যই দান-খয়রাত করে আবার আল্লাহর জন্যই দান-খয়রাত থেকে বিরত থাকে, সে যেন ইমান পূর্ণ করল।’ (মিশকাত: ৩০)
আল্লাহর পক্ষ থেকে সম্মান লাভ: রাসুল (সা.) বলেন, ‘কোনো বান্দা অন্যকে আল্লাহর উদ্দেশ্যে ভালোবাসলে, তার রব তাকে সম্মানিত করেন।’ (আহমাদ: ২২২৮৩)
আরশের নিচে স্থান লাভ: রাসুল (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন বলবেন, আমার মহিমা ও শ্রেষ্ঠত্বের জন্য পরস্পরকে যারা ভালোবেসেছিল তারা কোথায়? আজ আমি তাদের ছায়া দেব আমার ছায়াতলে, যেদিন আমার ছায়া ছাড়া কোনো ছায়া নেই।’ (মুসলিম: ২৫৬৬)
আখিরাতে উচ্চ মর্যাদা লাভ: মুয়াজ ইবনে জাবল (রা.) বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘আমার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে যারা পরস্পরকে ভালোবাসে, তাদের জন্য (পরকালে) থাকবে নুরের মিম্বার, যা দেখে নবী ও শহীদগণ তাদের ঈর্ষা করবেন।’ (তিরমিজি: ২৩৯০)
জান্নাত লাভ: রাসুল (সা.) বলেন, ‘আমি কি তোমাদের জান্নাতবাসীদের সম্পর্কে খবর দেব না? নবীগণ জান্নাতি, শহীদগণ জান্নাতি, সিদ্দিক জান্নাতি, নবজাতক জান্নাতি, আর ওই ব্যক্তিও জান্নাতি যে তার ভাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে।’ (সহিহুল জামে: ২৬০৪)