// নাটোর প্রতিনিধি
বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচি তারুণ্যর রোড মার্চে অংশগ্রহণ করতে রোববার নাটোর থেকে বগুড়া যাওয়ার পথে একটি হাইচ গাড়িতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। নাটোর শহর ও সদরের বিভিন্ন স্থানে রোববার হামলায় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ৩০/৩৫জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে দাবী করেছে জেলা বিএনপি। রোববার সকালে গাড়ি আগুন দেয়ার সময় গাড়িতে থাকা নেতাকর্মীদের চাইনিজ কুড়ালসহ বিভিন্ন অস্ত্র দিয়ে কোপানো ও মারপিটের ঘটনা ঘটে। রোববার সকাল সাড়ে ১০ টায় নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের ডাল সড়ক এলাকায় এঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে নাটোর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে গাড়ির আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় আহত নেতাকর্মীরা দৌড়ে বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়েন। তবে নওগাঁয় বিয়ের জন্য কনে দেখার কথা বলে হাইচ গাড়িটি ভাড়া করা হয়েছিল বলে জানা গেছে।
এর আগে রোববার সকাল ৬টার দিকে সদরের তেবাড়িয়া হাট এলাকায় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের বহনকারী আরেকটি গাড়িতে হামলা চালানো হয়। এসময় জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানাকে বেধড়ক মারপিট করা হয়েছে। তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নাটোর-ঢাকা মহা সড়কের সদরের সৈয়দ মোড় এলাকায়ও প্রায় একই সময়ে হামলার ঘটনা ঘটে। এখানে হামলায় আহত হয়েছেন, লালপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল মজিদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আনোয়ারুল ইসলাম, কাবিল উদ্দিন. যুবদল নেতা মজনু পাটোয়ারী প্রমুখ। আহত কাবিল উদ্দিনকেও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নাটোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, বগুড়ায় তারুণ্যর রোড মার্চে অংশগ্রহণের জন্য লালপুর থেকে ছাত্রদল ও যুবদলের নেতাকর্মীরা গাড়ি নিয়ে যাচ্ছিল। পথে আওয়াামী লীগের লোকজন পথ রোধ করে গাড়িতে আগুন জ্বালিয় দিয়ে আবার তাদেরকে মারপিট করে। আহত নেতা কর্মীরা প্রাণ বাঁচাতে প্রথমে স্থানীয় একটি মসজিদে আশ্রয় নিয়েছিল। পরে সেখান থেকে নিরাপদে যার যার এলাকায় চলে গিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালকুদার দুলু বলেছেন, কোন কারণ ছাড়াই ভোর থেকে জেলার বিভিন্ন স্থানে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা কর্মীদের উপরে হামলা করা হয়েছে। হামলায় দলের ৩০-৩৫জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে তিনি দাবী করেন। ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা এসব হামলা করেছেন বলেও তিনি দাবী করেন।
এব্যপারে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান জানান, নাটোরে যেখানে বিএনপির কোন কর্মসূচী নাই। তাদের কর্মসূচী বগুড়া-রাজশাহী, এখানে আওয়ামীলীগের লোকজন এধরনের কর্মকান্ডের কোন সুযোগ নাই। তবে পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখলে পরিষ্কার বোঝা যাবে। গ্যাস সিলিন্ডার বিষ্ফোরণ নাকি তারা নিজেরাই আগুন দিয়েছে।
নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি নাছিম আহম্মেদ জানান, গাড়িতে আগুন লেগেছে এমন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। গাড়ির আগুন নেভানো হয়েছে। তবে কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে জানা নেই। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্থ মাইক্রোবাসটি নাটোর থানায় আনা হয়েছে। এদিকে পুড়িয়ে দেয়া মাইক্রোবাস মালিক রফিকুল ইসলামের দাবি নওগাঁয় বিয়ের জন্য কনে দেখার কথা বলে এটি ভাড়া করা হয়েছিল। রোববার সকালে বগুড়া হয়ে নওগাঁয় যাওয়ার সময় তার গাড়িতে আগুন দেয়া হয়। এ সময় আগুনে তার গাড়িটি পুড়ে ছাই হয়ে যায়।