// চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি
চলতি মৌসুমে পাবনার চাটমোহরের কৃষকেরা বোরো ধান কাটা, মাড়াই শুরু করেছেন। ধানের ফলন ও দাম মোটামুটি ভাল থাকায় লাভবান হচ্ছেন এ এলাকার কৃষক। তবে, ঝড়, শিলা বৃষ্টি ও আগাম বন্যার আশংকায় দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষক।
চাটমোহর কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে চাটমোহরে ৯ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। গত বছর আবাদ হয়েছিল ৯ হাজার ৬১০ হেক্টর জমিতে। গত বছরের চেয়ে এবার ২০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ বেশি হয়েছে।
কৃষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ধানের দাম ও গবাদী পশুর খাদ্য (খড়) মূল্য বৃদ্ধির ফলে কৃষক বেশি জমিতে বোরো ধানের চাষ করছেন। বিলচলন ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের বোরো ধান চাষী এনামুল হক জানান, এখন পর্যন্ত প্রাকৃতিক দূর্যোগ না ঘটায় বিঘা প্রতি ২০ থেকে ২৫ মন হারে ফলন পাওয়া যাচ্ছে। ভাল ধান হওয়ায় এ এলাকার কৃষকের চোখে মুখে এখন হাসির ঝিলিক। কৃষি উপকরণের দাম বাড়ায় বর্তমান সময়ে প্রতি বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষে খরচ হচ্ছে প্রায় ১৫ হাজার টাকা। বোরো ধান চাষ করে বিঘা প্রতি কৃষকের লাভ থাকছে প্রায় নয় থেকে দশ হাজার টাকা।
একই গ্রামের কৃষক আব্দুর রশিদ জানান, এবার তিনি ১৮ হাজার টাকায় এক ফসলী তিন বিঘা জমি লিজ নিয়ে বোরো ধান চাষ করেছিলেন। ইতিমধ্যে ধান কেটেছেন। ধানের চারা উৎপাদন, জমি চাষ, মই দেয়া, চারা রোপন, সার এবং বালাই নাশক প্রয়োগ, আগাছা উৎপাটন, উপরি সার প্রয়োগ, ভিটামিন প্রয়োগ এবং কাটার শ্রমিক মজুরী বাবদ তার খরচ হয়েছে প্রায় ৩৬ হাজার টাকা। সেচ যন্ত্রের মালিককে সেচ বাবদ পাঁচ ভাগের এক ভাগ ধান দিতে হয়েছে তাকে। তিন বিঘা জমি থেকে তিনি নিজে ধান পেয়েছেন ৫১ মন। তিন বিঘা জমির ধানের খড় বিক্রি করেছেন ১২ হাজার টাকায়। বর্তমান প্রতি মন ধান বিক্রি হচ্ছে প্রায় এক হাজার টাকা। তিন বিঘা জমিতে বোরো চাষ করে তার লাভ হয়েছে মাত্র ৯ হাজার টাকা। তবে যারা নিজের জমিতে ধান চাষ করেছেন তারা অধিক লাভবান হচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
চাটমোহর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ.এ মাসুম বিল্লাহ জানান, চাটমোহরে বিভিন্ন জাতের উফশী ও হাহব্রীড ধানের চাষ হচ্ছে। নিচু এলাকায় ইতিমধ্যেই ধান কাটা শুরু হয়েছে। ৭ মে রবিবার পর্যন্ত ১ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে। উফশী ধানে হেক্টর প্রতি চাউল পাওয়া যাচ্ছে চার মেট্রিক টনেরও বেশি। হাইব্রীড ধানে হেক্টর প্রতি চাউল পাওয়া যাচ্ছে প্রায় পাঁচ মেট্রিক টন। উচু এলাকা গুলোতে আগামি দশ পনেরো দিনের মধ্যে ধান কাটা শুরু হবে। মাঠের অবস্থা এখন পর্যন্ত ভাল রয়েছে। বর্তমান বাজারে ধানের দাম বেশি। প্রাকৃতিক দূর্যোগ না ঘটলে বোরো ধান চাষীরা লাভবান হবেন।