সঞ্জু রায়, বগুড়া: অমর একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে কিভাবে পালিত হয় তা দেখতে এসে বগুড়ায় দুই বাংলার ঐতিহ্যতে হাজারো মানুষের মাঝে মুগ্ধতা ছড়ালেন পশ্চিমবঙ্গের “বালুরঘাট ছন্দম ” নামের নাচের স্কুলের নৃত্য শিল্পীরা এবং বালুরঘাট সাহিত্য সংগঠন “মুক্তাক্ষর” এর কবিদের ১২ সদস্য বিশিষ্ট দল।
বগুড়া সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আমন্ত্রণে তারা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলা শহর বালুর ঘাট থেকে এসেছেন বগুড়ায়। একুশের প্রথম প্রহরে রাত ১২টা ১ মিনিটে বগুড়ার শহীদ বেদীতে ফুল দেয়ার দৃশ্য এবং ভোর থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত ফুল দেয়ার দৃশ্য দেখে অভিভূত হন তারা। পরে অন্য সবার মতোই লাইনে দাঁড়িয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান দুটি সংগঠনের শিল্পীরা। একই দিন রাত ৮টায় “ছন্দম” ও মুক্তাক্ষর এর শিল্পীরা তাদের নাচ আর কবিতায় মুগ্ধ করে বগুড়ার জনসাধারণকে এ যেন বাংলার এক অপরুপ মিলনমেলায় পরিণত হয়।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের দপ্তর সম্পাদক এইচ আলিমের সঞ্চালনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বগুড়া সদর আসনের সংসদ সদস্য রাগেবুল আহসান রিপু, বগুড়া জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম, পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বিপিএম পিপিএম, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি তৌফিক হাসান ময়না ও সাধারণ সম্পাদক সাঈদ সিদ্দিকী সহ অনেকে।
অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করেন পল্লবী সরকার,বনশ্রী দাস,পৃত্থীরাজ লাহা, পুষ্পিতা ওরাও, সম্রাজী মজুমদার।
ছন্দমের নৃত্যানুষ্ঠান এবং মুক্তাক্ষরের স্বরচিত কবিতা পাঠ শেষে ছন্দমের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে উত্তরীয় প্রদান করা হয়। এছাড়াও মুক্তাক্ষরের পক্ষ থেকে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে সম্মাননা দেয়ামহয়। আগত অতিথিদের সমিলিত সাংস্কৃতিক জোটের পক্ষ থেকে সম্মাননা ও মেডেল প্রদান করা হয়।
বাংলাদেশে একুশের আয়োজন দেখতে আসা প্রসঙ্গে ছন্দমের সাধারণ সম্পাদক পূর্বা বঙ্গোপ্যাধায় বললেন, মায়ের ভাষা বাংলা। বাংলাদেশে ভাষা দিবস এত প্রানের স্পর্শ দিয়ে পালন হয় চোখে না দেখলে বিশ্বাস হতো না। এক কথায় মুগ্ধ যেখানে বার বার আসতে মন চায়।
মুক্তক্ষরের সভাপতি দেবাশীষ অধিকারী অভিব্যাক্তি প্রকাশ করে বলেন, কেউ দেখে তাজমহল, কেউ আইফেল টাওয়ার। আমি দেখলাম বগুড়ার বইমেলা এবং অনুষ্ঠানে বাংলা ভাষা এবং বাংলার মুখ। প্রান ছুয়ে গেছে বগুড়ার সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট এবং প্রসাশনের আয়োজনে প্রানের অনুষ্ঠানের সব দিক।
কবি তপন কুমার পাল বললেন, আমরাও বাঙ্গালী কিন্তু বিশ্বমাতি ভাষা প্রান, মন দিয়ে পালন করে বাংলাদেশ। দেখে গেলাম শুধু মুগ্ধ নয়, প্রানে গেঁথে নিলাম।
সমাজকর্মী দীপক ঘোষ জানালেন, শুধু আমাদের
অংশ গ্রহন নয় এটা, দুই বাংলার মিলন মেলা এটি।
এদিকে ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগ প্রসঙ্গে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি তৌফিক হাসান ময়না বলেন, ভারতীয় শিল্পীদের অসাধারণ উপস্থাপনার সাথে দেশের গান এবং নাচের সমন্বয় সত্যি মুগ্ধ করেছে তাদের। বাংলা ভাষাভাষীদের আত্মার এই বন্ধন আজীবন অটুট থাকুক সেই কামনা করেন তিনি।