বড়লেখায় ভূমি অফিসে জালিয়াতি : ৪ আসামীর রিমান্ড মঞ্জুর

মশাহিদ আহমদ, মৌলভীবাজার : মৌলভীবাজার বড়লেখা উপজেলা ভূমি অফিসে খতিয়ান জালিয়াতির অভিযোগে ৪ আসামীর রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো: আফসার ভূইয়ার আবেদনের প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালত মামলার ৩য় ও ৪র্থ আসামী
যথাক্রমে উপজেলা ভূমি অফিসের হিসাবরক্ষক রাসেন্দ্র কুমার দাস ও পরিচ্ছন্নতা কর্মী কাব‌্য চন্দ এর ২ দিনের রিমান্ত মঞ্জুর করেন এবং অন‌্য ২ আসামীর জেলগেটে ৭ ঘন্টার জিজ্ঞাসাবেদের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। উপজেলা ভূমি অফিস, বড়লেখার সাবেক প্রধান সহকারী ও হিসাবরক্ষক রাসেন্দ্র কুমার দাস বর্তমানে উপজেলা ভূমি অফিস, শ্রীমঙ্গলে কর্মরত। গত ৮ মে বিকালে তাদেরকে উপজেলা ভূমি অফিস, বড়লেখা হতে আটক করে থানায় সোপর্দ করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি)মোহাম্মদ আসলাম সারোয়ার। পরে সন্ধায় সার্ভেয়ার শামসুল হুদা পাঁচ জনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেন। জানা যায়- উপজেলা ভূমি অফিসের রেকর্ড এর কাস্টডিয়ান কানুনগোর দায়িত্বে থাকা সার্ভেয়ার এবং ইউনিয়ন ভূমি অফিসের রেকর্ড সংরক্ষণের দায়িত্ব তহসিলদারের। সার্ভেয়ার এবং তহসিলদার এর সহযোগীয়তায় উপজেলা ভূমি অফিস এবং ইউনিয়ন ভূমি অফিসের রেকর্ডপত্র জালিয়াতি করেছে একটি মহল। কিন্তু যারা রেকর্ড যথাযথভাবে সংরক্ষণ
করার কথা তারা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করেননি এবং রহস‌্যজনক ভাবে তাদের নাম রয়ে গেছে ধরা
ছোয়ার বাইরে। আরো জানা যায়, সার্ভেয়ার শামসুল হুদার নেতৃত্বে বড়লেখা ভূমি অফিসে
সিন্ডিকেটের হাতে বন্দী ছিল সাধারণ মানুষ। পাবলিক নামজারির আবেদন করলে সার্ভেয়ার
শামসুল হুদা রিপোর্টের নামে তাদেরকে নানাভাবে হয়রানী করতেন। বড়লেখা সদর তহসিলদার মজিদ
মিয়া তার রেকর্ড বই যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে না পারলেও এবং জাল খতিয়ান দিয়ে খাজনা
কাটলেও তার নামে মামলা করা হয়নি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে সার্ভেয়ার শামসুল হুদাকে
মৌলভীবাজার ডিসি অফিসের এলএ শাখায় বদলী করা হলেও তহসিলদার মজিদ মিয়া রয়ে গেছেন
বহাল তবিয়তে। অফিসের বাইরে দালাল এবং সিন্ডিকেট চক্রের হুতা সার্ভেয়ার শামসুল হুদার অন‌্যতম
সহযোগী তহসিলদার মজিদ মিয়া বলে একাধিক সূত্রে জানায়। বড়লেখা উপজেলার আদিত্যের মহাল
মৌজার ১৮০৫ নং নামজারি খতিয়ানে আব্দুছ ছাত্তার, আব্দুল জব্বার ও আব্দুল কুদ্দুছ ২০১৯ সালে
৩৩০০ ও ৩৩০১ নং দাগে সর্বমোট ১৯ শতাংশ ৬৭ পয়েন্ট নামজারি করান। চলিত মাসের ৮ মে
রেকর্ড পর্যালোচনায় দেখা যায়, উক্ত নামজারি মোকদ্দমার কাঙ্খিত দুই দাগের সাথে তৎকালিন
সহকারি কমিশনার (ভূমি) শরীফ উদ্দিন ও সার্ভেয়ার শামসুল হুদার স্বাক্ষর জাল করে সরকারের পক্ষে জেলা
প্রশাসকের নামীয় ১/১ খতিয়ান হতে বিরাট অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে আসামি চক্র জালিয়াতির
মাধ্যমে ১২ শতাংশ সরকারি ভূমি বইতে সংযোজন করেন। এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি)
মোহাম্মদ আসলাম সারোয়ার এর মুটোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন
ধরেননি।