ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধ :: পাবনার ভাঙ্গুড়ায় মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই সম্পন্ন হয়েছে। আজ শনিবার উপজেলা পরিষদের মুক্তিযোদ্ধা হোসেন আলী অডিটোরিয়ামে উন্মুক্তভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের এই যাচাই বাছাই কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। এটা ১০ জন মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে দুইজন অনুপস্থিত ছিলেন।উল্লেখ্য, এসব মুক্তিযোদ্ধারা এর আগে উপজেলা ও জামুকার (জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল) যাচাই-বাছাইয়ে বাদ পড়েন।
সূত্র জানায়, সম্প্রতি সারাদেশে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কার্যক্রমে ভাঙ্গুড়ার ১৫ জন মুক্তিযোদ্ধার নাম তালিকাভুক্ত করা হয়। এদের মধ্যে ১৪ জন বেসামরিক ও ১ জন সামরিক গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দীর্ঘদিন ভাতা উত্তোলন করেন। তবে চার বছর ধরে এসব মুক্তিযোদ্ধার ভাতা বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় জামুকার নির্দেশে এই ১৫ জন মুক্তিযোদ্ধার বৈধতা নিরূপণে আজ শনিবার যাচাই-বাছাই অনুষ্ঠিত হয়। তবে এই ১৫ জনের মধ্যে ৫ জনের নাম লাল মুক্তিবার্তায় থাকায় সীমিত আকারে যাচাই-বাছাই হয়। এরওপর অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ইসমাইল হোসেন ও আমির হোসেন নামে দুই মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাইয়ে উপস্থিত হননি। এমনকি এই দুইজনের পক্ষে কোনো মুক্তিযোদ্ধা সাক্ষ্য দেননি। এতে এই দুইজনকে নিয়ে সম্মেলন কক্ষে উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে নানা জল্পনা-কল্পনার সৃষ্টি হয়। এদিকে যাচাই-বাছাই কার্যক্রমে মৃত্যুবরণ করা তিনজন মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সদস্যরা সাক্ষীদের নিয়ে উপস্থিত হয়ে স্বপক্ষে তথ্য প্রমাণাদি উপস্থাপন করেন।
এদিন যাচাই-বাছাই কার্যক্রমে জামুকার প্রতিনিধি হিসেবে সভাপতিত্ব করেন ভাঙ্গুড়া উপজেলার বাসিন্দা ও সাবেক সচিব এম এ হান্নান। সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আশরাফুজ্জামান। এছাড়া যাচাই-বাছাইয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যের প্রতিনিধি সাবেক কমান্ডার মোকসেদ আলী ও জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ উপস্থিত ছিলেন।
মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সদস্যরা জানায়, যাচাই বাছাইকৃত মুক্তিযোদ্ধারা জামুকার সুপারিশ ছাড়াই অবৈধভাবে গেজেটভুক্ত হয়ে ভাতা উত্তোলন করেছিলেন। এ অবস্থায় ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে উপজেলা পর্যায়ে যাচাই-বাছাইয়ে উপযুক্ত প্রমাণ ও দলিলাদি দেখাতে না পেরে ১৭ জন মুক্তিযোদ্ধার ভাতা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর তারা সবাই জামুকায় আপিল করেন। আপিলে মোসলেম উদ্দিন ও রহমত আলী ছাড়া অন্য ১৫ জনের ভাতা বন্ধের সিদ্ধান্ত বহাল রাখে জামুকা।
যাচাই বাছাই কমিটির সদস্য ও সাবেক কমান্ডার মোকসেদ আলী বলেন, আমির হোসেন ও ইসমাইল হোসেন ছাড়া তালিকার সকল মুক্তিযোদ্ধার তথ্য প্রমাণাদি ও সাক্ষীদের সাক্ষ্য যাচাই-বাছাই করা হয়। এই ২ জন মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সাক্ষী অনুপস্থিত থাকায় যাচাই-বাছাই কার্যক্রমের মাধ্যমে পুনরায় মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে গেল।
ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও যাচাই বাছাই কমিটির সদস্য সচিব সৈয়দ আশরাফুজ্জামান বলেন, অত্যন্ত স্বচ্ছতার সাথে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে মিটিং করে যাচাই-বাছাই কার্যক্রমের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত দেয়া হবে।