পাবনার চাটমোহরের হিসাবরক্ষণ অফিসার সিরাজুল হকের বিরুদ্ধে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকাদের নিকট থেকে লাখ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষকদের বেতন ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (ইএফটি), বেতন সংক্রান্ত নির্ভুল তথ্য গ্রহন ও স্কুল পরিবর্তনের তথ্য সন্নিবেশ করতে শিক্ষকদের নিকট থেকে অপ্রয়োজনে অনৈতিক ভাবে টাকা নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সরকার ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন পরিশোধ করতে ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার চালু করার নির্দেশ দিয়েছেন। ইএফটির কাজ সুষ্ঠ ভাবে সম্পন্ন হলে শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন-ভাতা কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সরাসরি তাদের হিসাব নম্বরে জমা হবে। প্রত্যেক বিদ্যালয়ের আলাদা আলাদা কোড নম্বর রয়েছে। বিদ্যালয়ের কোড ওপেন করলেই ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নাম দেখা যায়। কোন শিক্ষক জাতীয় পরিচয় পত্র অনুযায়ী ভূল সংশোধন করতে গেলে তাদের নিকট থেকে এক হাজার থেকে এক হাজার দুই’শ টাকা পর্যন্ত নিচ্ছেন হিসাবরক্ষণ অফিসার সিরাজুল হক।
গতকাল একাধিক শিক্ষক শিক্ষিকা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিস অনেক শিক্ষকের নামের সঙ্গে বিদ্যালয়ের নাম উল্লেখ করেননি। ইএফটি করতে গিয়ে যে শিক্ষকের নামের সঙ্গে বিদ্যালয়ের নাম নেই অথবা পূর্বে চাকুরীরত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম বহাল রয়ে গেছে সেক্ষেত্রে নতুন বদলীকৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম যোগ করতে এক হাজার করে টাকা নেওয়া হচ্ছে। যেহেতু ভবিষ্যতেও শিক্ষকদের যে কোন সমস্যা সমাধানে হিসাব রক্ষন অফিসারের নিকট যেতে হবে তাই ভবিষ্যতের কথা ভেবে শিক্ষকরা প্রতিবাদ করার সাহস পান না। বাধ্য হয়ে তারা বিভিন্ন সময়ে হিসাব রক্ষণ অফিসারকে ঘুষ দিয়ে আসছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার জানান, এটা কঠিন কোন কাজ নয়। যেভাবেই হোক কিছু শিক্ষকের নাম ঠিকানায় ভুল হয়েছে। বিদ্যালয়ের নাম ওপেন করলেই শিক্ষকের নাম ওপেন হবে। তখন তার নামের সঙ্গে বিদ্যালয়ের নাম লিখে দিলেই হয়ে গেল। হিসাবরক্ষণ অফিস সেটাই করছে। এজন্য টাকা নেওয়ার কথা নয়। এ ব্যাপারে চাটমোহর উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সিরাজুল হক কোন সদুত্তর দিতে পারেন নি। চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সৈকত ইসলাম জানান, এ ব্যাপারে কোন শিক্ষক আমাকে অবহিত করেন নি। এমনটি যদি হয়ে থাকে তবে তা খুব খারাপ হচ্ছে। এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে আমি সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তপক্ষকে অবহিত করব।
ডিভিশনাল কন্ট্রোলার অব এ্যাকাউন্টস (রাজশাহী) গৌড়াঙ্গ চন্দ্র দেবনাথ মঙ্গলবার দুপুরে জানান, শিক্ষক শিক্ষিকাদের নামের বানান বা তথ্যে যে কোন কারণে ভূল থাকতে পারে। বিদ্যালয়ের নামে ভূল বা পরিবর্তিত বিদ্যালয়ের নাম লিপিবদ্ধ করা প্রয়োজন হতে পারে। এটি সংশোধনে টাকা নেওয়ার কোন সুযোগ নাই। চাটমোহর উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সিরাজুল হক যদি টাকা নিয়ে থাকেন তবে তিনি খুব খারাপ কাজ করেছেন।